Jitendra Chowdhury দুর্বলতা থেকেই অধীরের মুখে জিতেন্দ্রর নাম? একান্তে বোমা ফাটালেন রাজ্য সম্পাদক

মাথা ঠাণ্ডা করেই সিপিআইএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরি (Tripura State Secretary Jitendra Chowdhury) বললেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বেন তাঁরাই৷ একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন আরও অনেক কথা৷

Tripura State Secretary Jitendra Chowdhury

রাত পোহালেই ত্রিপুরার (Tripura) ফলাফল৷ তার আগে এক্সিট পোলের অনুমান ঘিরে ত্রিপুরা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাল৷ তবুও মাথা ঠাণ্ডা করেই সিপিআইএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরি (Tripura State Secretary Jitendra Chowdhury) বললেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বেন তাঁরাই৷ একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন আরও অনেক কথা৷

আগামী পরশু ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। আপনারা কি প্রত্যাশা রাখছেন? গতকালের এক্সিট পোলের প্রেক্ষিতে আপনার মতামত কি?
দেখুন, এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হতে পারে, গত পাঁচটি বছরে ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা, গণতন্ত্র হরণ করার যে প্রতিদিনের কষ্ট, এর থেকে যাতে ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ মুক্তি পায়, তার জন্য আমাদের পার্টি সর্বাত্মক ভাবে কাজ করেছে। রাত দিন আমরা পরিশ্রম করেছি। শাসক দল, তাঁরা জানে ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ যদি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেয়, তাহলে তাঁদের হার অনিবার্য। কাজেই এই নির্বাচনকে প্রহসণে পরিণত করার সমস্ত উদ্যোগ তারা নিয়েছিল৷ সেই জায়গায় জনগণের ঐতান্ত্রিক প্রচেষ্টা এবং প্রশাসনের তরফ থেকেও ইতিবাচক ভূমিকা, সবটা মিলিয়ে গত ১৬ তারিখ ভোট হয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। অর্থাৎ, মানুষ ভোট দিতে পেরেছে৷ ভোটবাক্স এখন বন্ধ আছে৷ কাজেই এটা এখন সুষ্ঠুভাবে গণনার মধ্যে দিয়ে মানুষের রায় যাতে প্রতিফলিত হয়, তা সুন্দরভাবে সুসম্পন্ন হয় তার জন্য সমস্ত রকমের প্রস্তুতি, এর পাশাপাশি প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্যও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

এক্সিট পোল যায় বলে থাকুক, এটা পরিষ্কার শাসক দলকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য। ১৬ তারিখ যখন তাঁদের সমস্ত চক্রান্ত ব্যর্থ হল, তাঁদের লোকজনের মন ভেঙে গেল, এঁদের ধরে রাখার জন্য এক্সিট পোল অর্গানাইজ করা হয়েছে। এটাকে এক্সিট পোল না বলে এটা বিজেপির বললে ভালো হয়। এগুলো দেখবেন ২ তারিখ মিথ্যায় পর্যভূষিত হবে৷ গণতন্ত্রের এবং শান্তির নতুন সূর্যের উদয় হবে৷

আপনারা কতগুলি আসন আশা করছেন?
যেভাবে মানুষ ভোট দিয়েছে, ভোটের পর যে অভিব্যক্তি আমরা দেখছি, হাটে-মাঠে-বাজারে সর্বত্র, সেখানে একটা কমফোর্টেবল মেজরিটি নিয়ে আগামী দিনে সরকার তৈরি হবে।

ত্রিপুরায় গিয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী আপনাকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলেছেন। যদি আপনারা জেতেন তাহলে কী মুখ্যমন্ত্রী হবেন? আপনার দলের তরফে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?
আমাদের দলে এভাবে সিদ্ধান্ত হয় না। অধীরবাবু আমাকে ভালো চেনেন৷ লোকসভাতে আমরা একসঙ্গে ছিলাম৷ হয়তো আমার প্রতি ওনার দুর্বলতা আছে বলেই এই কথা বলেছেন৷ এবিষয়ে যথাসময়ে যথা সিদ্ধান্ত আমাদের দল নেবে৷ তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ বিষয়ে আগাম কিছু বলা ঠিক হবে না।

আপনার কী মনে হয় বাম-কংগ্রেস অনায়াসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে? নাকি তিপ্রা মোথাকে আপনাদের প্রয়োজন হবে? যদি হয় সেক্ষেত্রে কী করবেন?
দেখুন, এটা ভোটের আগেই বলেছি যে তিপ্রা মোথা উন্নয়নের প্রশ্নে যে সমস্ত ইস্যু নিয়ে লড়াই করছে, তাঁদের সঙ্গে আমরা ১০০ ভাগ সহমত পোষণ করি। সেই জায়গাতে তিপ্রা মোথাকেও আমরা চাইছিলাম এই সমঝোতা মধ্যে তাঁরা আসুক। আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে ছিল কিন্তু শেষ অবধি হয়নি। তারপর যখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়ে গেল, তখনও আমরা বলেছিলাম ভোটের পরে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হলেও বা না হলেও, আমরা তিপ্রা মোথাকে চাই। এই রাজ্যে স্থায়ী শান্তি এবং উন্নয়নকে আরও গতিশীল করার জন্য আমাদের সেই বক্তব্য একই থাকবে।

যদি আপনারা ক্ষমতায় আসেন সেক্ষেত্রে আপনারা কোন কাজটা প্রথমে করবেন?
সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, যেগুলিকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছিল, সেই সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে পুনরায় উজ্জীবিত করা হবে। সবর্ত্র দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল, সেটাকে বিদায় করা হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে৷ রাজ্যের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবে। তাঁদের ক্ষোভ দুঃখের কথা সরকারের পক্ষে হোক বা বিপক্ষে, স্বাধীনভাবে বলতে পারবেন৷ সেই পরিবেশ গড়ে তোলা হবে।

কর্মসংস্থানের প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গের মতোই অবস্থা ত্রিপুরার। সেটা নিয়ে কী ভাবছেন?
পশ্চিমবঙ্গের থেকেও খারাপ অবস্থা ত্রিপুরায়৷ আমরা বলেছি ক্ষমতায় এলে আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান গড়ে তুলব। একইসঙ্গে ২০০ দিনের কাজের বিষয়ে সুনিশ্চিত করা হবে৷ ফলত, গ্রামীন স্তরের পাশাপাশি স্থায়ী কাজের বিষয়েও জোর দেওয়া হবে৷