জামশেদপুরে সস্ত্রীক গ্রেফতার হলেন শীর্ষ মাওনেতা কিষাণদা

নিউজ ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন সিপিআই মাওবাদী সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় নেতা প্রশান্ত বসু (Prashanth Bose) ওরফে কিষানদা (kishan da)। এই শীর্ষ…

Prashanth Bose

নিউজ ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন সিপিআই মাওবাদী সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় নেতা প্রশান্ত বসু (Prashanth Bose) ওরফে কিষানদা (kishan da)। এই শীর্ষ মাও নেতার সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্ত্রী শীলা মারান্ডিকেও (shila marandi)। জানা গিয়েছে, চিকিৎসার জন্য এই মাওবাদী নেতা শুক্রবার জামশেদপুরে (jamshedpur) এসেছিলেন। সেখানেই একটি বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

আদতে কলকাতার যাদবপুরের (yadavpur) বাসিন্দা কিষানদা। যদিও পরে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দরাবাদে (hyderabad) থাকতে শুরু করেন। মাওবাদী ও সিপিআইএম-এর সংযুক্তিকরণের সময় তিনি ছিলেন সংগঠনের মিলিটারি কমিশনের প্রধান। একইসঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক ছিলেন তিনি। কিষানদা সম্পর্কে কোনও খবর দিতে পারলে বা তাঁকে ধরিয়ে দিতে পারলে দু’কোটি টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড (jharkhand goverment) সরকারের পক্ষ থেকেও কিষানদা সম্পর্কিত কোনও খবর বা তথ্য দিতে পারলে এক কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।

একাধিক ভাষায় কথা বলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর। খুব সহজেই তিনি যুবসমাজের মন জয় করে ফেলতেন। তাই কিষানদার বিশেষ দায়িত্ব ছিল নতুন যুবকদের সংগঠনের কাজে নিয়ে আসা। একসময় লালগড়ে (lalgarh) মাওবাদী নেতা কিষানজির সঙ্গেও তিনি একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

শুক্রবার জামশেদপুরের চন্ডেলের কাছে একটি বাড়ি থেকে সস্ত্রীক এই শীর্ষ মাও নেতাকে গ্রেফতার করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। কিষানদাকে ধরার ব্যাপারে ঝাড়খণ্ড পুলিশকে সবধরনের সহযোগিতা করেছে অন্ধপ্রদেশের স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো।

প্রশান্ত বসুর গ্রেফতারে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অন্ধপ্রদেশের মতো বিভিন্ন রাজ্যে মাওবাদী সংগঠনের ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

কিষানদার স্ত্রী শীলা ছিলেন সিপিআই মাওবাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য। শেষ পাঁচ বছর ধরে তিনি সংগঠনের মহিলা শাখার দায়িত্ব সামলাতেন। এর আগে ২০০৬ সালে একবার রৌরকেল্লা থেকে শীলাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও তিনি পরে জামিনে মুক্তি পান। শীলাও সংগঠনের কর্মীদের কাছে একাধিক নামে পরিচিত ছিলেন। অনেকেই শীলাকে বুধানি (budhani), কেউ বা হেমা (hema) নামে চিনতেন। তবে বারবার নাম বদলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা কিছুই করতে পারলেন না।

৭৫ বছর বয়সি কিষানদার আসল নাম প্রশান্ত বসু (prasanta basu) হলেও তিনি একাধিক নামে পরিচিত ছিলেন। অনেকেই কিষানদাকে কাজল (kajal), মহেশ (mahesh), নির্ভয় (nirbhay) মুখোপাধ্যায় নামেও চিনতেন। গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের মাওবাদী সংগঠনের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বয়সজনিত কারণে সম্প্রতি বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন এই মাও নেতা। যে কারণে সম্প্রতি তিনি সংগঠনের সক্রিয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও ঝাড়খণ্ডের সারান্ডা (saranda) জঙ্গল থেকে সংগঠনের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করতেন। শারীরিক সমস্যা বেড়ে চলায় সম্প্রতি তিনি গেরিলা জোন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন লোকালয়ে। চিকিৎসা করানোর জন্যই তিনি জামশেদপুরে এসেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।