Terror Alert: নেপাল থেকে নাশকতার ছক, সূত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া

আফগানিস্তানে তালিবান জঙ্গিরা ক্ষমতা দখল করতেই সন্দেহ দানা পেকেছিল। কারণ, তালিবান সহযোগী হাক্কানি নেটওয়ার্ক গোষ্ঠীর জাল দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ছড়ানো। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই মদতে…

Terror alert Militants activity from nepal

আফগানিস্তানে তালিবান জঙ্গিরা ক্ষমতা দখল করতেই সন্দেহ দানা পেকেছিল। কারণ, তালিবান সহযোগী হাক্কানি নেটওয়ার্ক গোষ্ঠীর জাল দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ছড়ানো। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই মদতে চলা এই ভয়ঙ্কর সংগঠনটিকে সমঝে চলে তালিবান নেতৃত্ব। হাক্কানি গোষ্ঠীর পুরনো ‘সোর্স’ সক্রিয়। তাদের মাধ্যমে ভারতে নাশকতার ছক করা হচ্ছে এমন সন্দেহ থাকছেই (Terror Alert)। নেপাল থেকে নাশকতার ছক করা হয়েছে বলে সন্দেহ।

আসন্ন সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে নাশকতার জন্য বিহার, উত্তরবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব নাশকতার জন্য বেছে নিতে পারে হাক্কানি গোষ্ঠী এমনই সন্দেহ পোক্ত হতে শুরু করেছে গোয়েন্দা বিভাগের কাছে। কিছু সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নেপাল থেকে ভারতে ঢুকে বিভিন্ন স্টেশন কিংবা কোনও বড় শহরে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে হাক্কানি নেটওয়ার্ক সংশ্লিষ্ট ভারতের কিছু সংগঠন।

রেল দুর্ঘটনার অছিলায় নাশকতা
গোয়েন্দা বিভাগের আরও ধারণা, রেল দুর্ঘটনার মতো বড়সড় কিছুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে সরাসরি দূর্ঘটনার আড়ালে নিজেদের রাখা যায়। নেপাল থেকে উত্তর বিহার, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরবঙ্গে সরাসরি প্রবেশ করা যায়। এই সব এলাকায় বড়সড় কিছু ঘটার আশঙ্কা প্রবল।

নেপালে সক্রিয় হাক্কানি নেটওয়ার্কের ‘সোর্স’ দের সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি বিশেষ যোগাযোগ রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দখলে আফগানিস্তানে সেই ‘সোর্স’ ছিল দূর্বল। তবে গত বছর ১৫ আগস্ট কাবুল থেকে মার্কিন সেনা সম্পূর্ণ সরে যেতেই তালিবান সরকার দ্বিতীয়বার প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পরেই তালিবান সহযোগী হাক্কানি গোষ্ঠীর সেই যোগাযোগ পুনরায় সক্রিয় হয়েছে।

নাশকতার ছক কেমন হতে পারে?
হাক্কানি নেটওয়ার্ক তাদের নেপাল অপারেটরদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে, ভারতের যে কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে। একইসঙ্গে তাদের লক্ষ্য মাওবাদীরা।

তাৎপর্যপূর্ণ, ভারতের মাওবাদী সংগঠন বিহার, আর বিহার সংলগ্ন উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চল, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়, পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে সক্রিয়। মাওবাদীরা ইতিমধ্যেই সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বনধ ডেকেছে। রবিবার ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে নাশকতা ঘটিয়েছে তারা।

পরিস্থিতি খারাপ বুঝে বিহার জুড়ে জারি হয়েছে সতর্কতা। পাটনা স্টেশনে আরপিএফ বিশেষ তল্লাশি চালায়। সন্দেহজনক ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। নেপাল থেকে উত্তর বিহারের দিকে আসা চেকপোস্টগুলিতে কড়া নজরদারি চলছে। তবে দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পুরোটাই খোলা। সেক্ষেত্রে নেপাল থেকে অনুপ্রবেশ আটকানো মুশকিল।

উত্তরবঙ্গ ও উত্তর পূর্ব নিয়ে চিন্তা
উত্তরবঙ্গের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত। সেই সীমান্ত পেরিয়ে বিহার ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে অনায়াসে যাতায়াত করা যায়। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) বিচরণক্ষেত্রে নাশকতার আশঙ্কা প্রবল। কারণ, কেএলও প্রধান জীবন সিংহ আগে থেকেই রক্তাক্ত পরিস্থিতির হুমকি দিয়ে রেখেছে। উত্তর দিনাজপুরে পার্সেল বোমা বিস্ফোরণ তেমনই ইঙ্গিত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের দিকেও বিশেষ সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মনিপুর বিধানসভা ভোট ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা আছে। এছাড়া নাগাল্যান্ডের মন জেলায় অসম রাইফেলসের গুলিতে নিহতদের বদলা নিতে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। মিজোরামে বাজেয়াপ্ত হয়েছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক।
ঘটনাগুলোর পারস্পরিক বিচার করছে গোয়েন্দা বিভাগ। নেপালের সঙ্গে খোলা সীমান্ত চিন্তা বাড়াচ্ছে।