মোদী রাজ্যে ভাঙা পড়ল দরগা! আক্রান্ত পুলিশ

somnath-dargah-demolition-violence-gujarat-police-attacked

সোমনাথ, ১২ নভেম্বর: গুজরাটের ধর্মীয় ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দু সোমনাথ মন্দিরের কাছাকাছি সোমবার সন্ধ্যায় অবৈধ অবরোধ অপসারণ অভিযানে হঠাৎ হিংসাত্মক পরিস্থিতির জন্ম নেয়। মন্দির থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি অবৈধ দর্গা ভাঙার চেষ্টায় প্রায় ১০০ জনের একটি ভিড় পুলিশের উপর পাথর ছোড়ে, ফলে দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।

Advertisements

পুলিশকে লাঠিচার্জ এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে হয়। এরপরও অভিযান চালিয়ে গিয়ে ১২টি অবৈধ কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে, এবং ৬,০০০ বর্গমিটারেরও বেশি সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

   

“মন্দিরের সম্পত্তিতে নজর CPIM-এর”! ‘বিস্ফোরক’ দাবী কংগ্রেস নেতার

১০০-এর বেশি বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়েছে, এবং এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েছে, যা গত বছরের অনুরূপ একটি অভিযানের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।

সোমবার সকাল থেকেই গির-সোমনাথ জেলা প্রশাসনের অধীনে অবৈধ অবরোধ অপসারণ অভিযান শুরু হয়। সার্ভে নম্বর ৮৩১-এ অবস্থিত সরকারি জমিতে ১২টি অবৈধ কাঠামো ছিল যার মধ্যে ১১টি আবাসিক ঘর এবং দোকান।

এগুলো শান্তিপূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু সন্ধ্যা ৫:৫৫-এ যখন হাজরত রঙ্গিলাশাহ দর্গার সীমান্ত দেয়াল ভাঙার কাজ শুরু হয়, তখন পরিস্থিতি বদলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, কোনো পূর্ববর্তী কর্মকর্তা দর্গা ভাঙবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

Advertisements

হঠাৎ ৭০-১০০ জনের একটি ভিড়—যার মধ্যে নারী ও শিশুসহ অনেকে—সেখানে জড়ো হয়। তারা চিৎকার করে অভিযান বন্ধ করার দাবি জানান। পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে তারা পুলিশের উপর পাথর ছোড়া শুরু করেন।

এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন, যাদের চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে।গির-সোমনাথের এসপি মনোহর সিং জাডেজা বলেন, “আমরা ভিড়কে শান্ত করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা হিংসাত্মক হয়ে ওঠায় লাঠিচার্জ এবং তিন রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে অভিযান চালিয়ে গিয়েছি।” অভিযানে ১২টি কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে, যাতে দর্গাটিও অন্তর্ভুক্ত। মঙ্গলবার সকাল নাগাদ ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করে ৬,০০০ বর্গমিটারেরও বেশি জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এই জমির মূল্য কয়েক কোটি টাকা। প্রশাসনের দাবি, এই অবরোধগুলো সোমনাথ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের পথে বাধা সৃষ্টি করছিল। গত এক বছর ধরে নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও কেউ সরেনি, তাই অভিযান চালানো হয়েছে।

এই ঘটনা গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। তখনও সোমনাথের প্রভাস পটন এলাকায় একই ধরনের অভিযানে ৯টি ধর্মীয় স্থান যার মধ্যে ১২০০ বছরের পুরনো হাজি মাঙ্গরোল দর্গা, শাহ সিলার দর্গা, গরিব শাহ দর্গা, জাফর মুজাফফর দর্গা, একটি মসজিদ এবং ৫০০ বছরের পুরনো কবরস্থান ভেঙে ফেলা হয়। সেই অভিযানে ১০২ একর জমি (মূল্য ৩২০ কোটি টাকা) পুনরুদ্ধার করা হয়, ১৫০ জনকে আটক করা হয়।