পরীক্ষায় (Exam) ফেল করায় ‘আত্মহত্যা’! ইন্টারমিডিয়েটের রেজাল্ট দেখে এমনই চরম সিদ্ধান্ত বেছে নিল তেলেঙ্গনার সাত পড়ুয়া। ২৪ এপ্রিল তেলেঙ্গনা বোর্ড অফ ইন্টারমিডিয়েট এক্সামিনেশনস প্রথম বর্ষ এবং দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফল ঘোষণা করে। তারপর থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ‘আত্মহত্যা’ করেছে সাত পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে দু’জন ছাত্রী।
পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের একাংশের মতে, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার জন্য ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। অনেকেই সেই নম্বর না পাওয়ায় ফেল করে যায়। সেই হতাশা থেকে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো চরম পদক্ষেপ করেছে তারা। প্রতি বছরই তেলেঙ্গনায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এই বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্কও করে শিক্ষা দফতর।
মেহবুবাদের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, পরীক্ষায় ফেল করায় দুই পড়ুয়া ‘আত্মহত্যা’ করেছে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ইস্ট জোন) আর গিরিধর জানিয়েছেন, পরীক্ষায় ফেল করায় প্রথম বর্ষের আরও এক ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। নাল্লাকুন্টা এলাকার আরও এক কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয় রেললাইনের ধার থেকে। পরীক্ষায় খারাপ ফল করাই সে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে সন্দেহ পুলিশের।
মাঞ্চেরিয়াল জেলার এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের তিন শিক্ষার্থী ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে খবর মিলেছে। হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে রাজেন্দ্রনগর, খাম্মাম, মেহবুবাবাদ এবং কোল্লুরে ‘আত্মহত্যা’-র ঘটনাগুলি ঘটেছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে মাঞ্চেরিয়াল জেলা। সেখানে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর তার বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করে। সে চারটি বিষয়ে ফেল করেছিল। ‘আত্মহত্যা’ করা শিক্ষার্থীদের বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা গলায় ফাঁস দিয়ে, চলন্ত ট্রেনের সামনে লাফ দিয়ে, কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে বা পুকুরে ডুবে ‘আত্মহত্যা’ করেছে।
২০২৪ সালের শুরুর অনুষ্ঠিত ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় ৯.৮ লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। প্রথম বর্ষে (একাদশ শ্রেণির সমতুল্য) পাশ করেছে ৬১.০৬ শতাংশ পড়ুয়া (২.৮৭ লক্ষ)। দ্বিতীয় বর্ষের ক্ষেত্রে পাশের হার ছিল ৬৯.৪৬ শতাংশ (৩.২২ লক্ষ)। ২০১৯ সালে তেলেঙ্গানায় ইন্টারমিডিয়েটের ফল প্রকাশের পর ২২ জন পড়ুয়া ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন।
গোটা দেশে যত পড়ুয়া আত্মহত্যা করে, তার ৫ শতাংশই তেলেঙ্গানায়। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ২৮টি রাজ্যের মধ্যে তেলেঙ্গনা একাদশ স্থানে ছিল। পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে সবচেয়ে উপরে রয়েছে – মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশ।