চিন সফরে যাওয়ার আগে ভারত সফরে এলেন শেখ হাসিনা। নরেন্দ্র মোদী তৃতীয়বার শপথগ্রহণের পর প্রথম ভারতে সফর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। শুক্রবার রাতে নয়াদিল্লিতে অবতরন করে হাসিনার বিমান। গতকাল হোটেলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দুজনের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাত্ হয়েছে বলেই বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার সকালে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে রাইসিনা হিলে যান হাসিনা। সেখানে কূটনৈতিক প্রোটোকল অনুযায়ী তাঁকে গার্ড-অব-অনার দেওয়া হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসবেন হাসিনা।
বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দু-দেশের মধ্যে বানিজ্য, বিনিয়োগ, বন্দর উন্নয়ন, পরিকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুত্ সহব নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা দু-দেশের মধ্যে। গত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০ কোটি ডলার। ওএনজিসির মতো একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার তেল, ডিজেল রপ্তানিও হয়েছে পাইপলাইনের মাধ্যমে। এছাড়াও ত্রিপুরার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ হাইস্পিড ট্রেন চালানোর প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে সেরে ফেলেছে দুটি দেশ।
এমনকি দীর্ঘদিন ধরে জটে আটকে থাকা তিস্তা চুক্তি নিয়েও ‘জল গড়াতে’ পারে বলে দাবি সাউথ ব্লকের। ২০১১ সালে মনমোহন সিং ঢাকায় গিয়ে তিস্তা জল বন্টন নিয়ে চুক্তি করেছিলেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। তারপর মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের বাধায় সেই জল বন্টনের কাজ এগোয়নি। যারফলে কূটনৈতিক জটিলতায় পড়তে হয়েছিল দুই- দেশকেই। এবার সেই বিষয়ে আলোচনা কতদূর এগোয় সেটাই দেখার অপেক্ষায় কূটনৈতিক মহল।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে বাংলাদেশকে ঘুঁটি করেছে বেজিং। সেই অনুযায়ী আগামী জুলাইতে চিন সফরে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। সেখানে পাঁচ দিনের সফর তাঁর। হাসিনার সেই সফরে ‘গেম চ্যাঞ্জিং’ কিছু অপেক্ষা করে আছে বলে আগেই জানিয়েছে ঢাকায় চিনের রাষ্ট্রদূত। আবার, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে চটিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয় হাসিনার। গত নির্বাচনেও ভারতের খোলাখুলি সমর্থন তাঁকে চতুর্থবারের জন্য মসনদে বসিয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। তাই বেজিং সফরে যাওয়ার আগে নয়াদিল্লিকে শান্ত রাখতেই কি ভারত সফরে এলেন হাসিনা? প্রশ্ন তুলছে কূটনৈতিক বিশ্লেষকমহল।