ভোট যুদ্ধে সফলতা তেমন না এলেও দেশের ভোট রাজনীতিতে সিপিআইএম তৈরি করল অভূতপূর্ব উদাহরণ। তাদের আইনি লড়াইতে খুলছে প্যান্ডোরা বাক্স। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর এসহিআই অবশেষে নির্বাচনী বন্ডের বিপুল লেনদেনের তথ্য তুলে দিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। ১৫ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে নির্বাচনী বন্ডের বিস্তারিত তথ্য।
সিপিআইএম দেশের একমাত্র দল যারা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে টাকা নেয়না। অভিযোগ, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃ়ণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দল বিপুল আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করে। এবার বন্ডদাতাদের তালিকা কমিশনের সাইটে দেখতে পাবেন দেশবাসী। জানা যাবে কারা বিপুল টাকা দিয়েছে।
নির্বাচনী বন্ডকে ‘অসাংবাধিক’ আখ্যা দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়ে নির্বাচনী বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করা হয়।
সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজনৈতিক দলগুলিতে ইলেকটোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান দেওয়া যাবে না। নির্বাচনী বন্ড কিনে যারা রাজনৈতিক অনুদান দিয়েছেন, তাদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, তাও জানাতে বলেন প্রধান বিচারপতি। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় স্টেট ব্যাঙ্ককে।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে নির্বাচনী বন্ড দাতাদের নাম ফাঁস করতে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছিল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। দেখা যায়, তাদের দাবি করা সময় লোকসভা ভোটের পর। তীব্র প্রতিবাদ জানায় সিপিআইএম। প্রতিবাদের জেরে রাজনৈতিক মহল আলোড়িত হয়। নির্বাচনী বন্ড দাতাদের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। চাপে পড়ে নরম হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনী বন্ড:
পরিচয় ও অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এটাই নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। নিয়ম ছিল কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবে। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার। তবে একই সঙ্গে ওই বন্ডে দাতাদের পরিচয় এবং দানের অর্থের পরিমাণ গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল তারা। অভিযোগ ওঠে, নির্বাচনী বন্ডের নামে বিপুল পরিমাণ কালো টাকার লেনদেন হয়েছে। সিপিআইএম সরাসরি আইনি যুদ্ধে নামে।