ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দৃঢ় বার্তা এবং চলতি ত্রিসেনা মহড়া ‘ত্রিশূল ২০২৫’-এর প্রেক্ষিতে ফের উত্তেজনা ছড়াল ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে। ইসলামাবাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ভারতের কোনও আগ্রাসন বা অনুপ্রবেশ ঘটলে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি দিয়ে পাল্টা জবাব দেবে।” তাঁর ভাষায়, “আমরা কোনও প্ররোচনা বরদাস্ত করব না। পাকিস্তান আগের চেয়ে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাবে। যদি ভারত আমাদের ভূমিতে আক্রমণ করে, আমরা তা ছেড়ে দেব না।”
কড়া বার্তা রাজনাথের
এই হুমকির প্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সপ্তাহে রাজস্থানের জয়সলমেরে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ‘বরখানা’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, “অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান বুঝে গিয়েছে ভারতের শক্তি কতটা। এবার তারা দু’বার ভাববে, ভারতের বিরুদ্ধে কোনও দুঃসাহস দেখানোর আগে।”
তিনি আরও বলেন, “অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি, কেবল বিরতিতে আছে। আমাদের পাইলটরা পাকিস্তানকে ভারতের শক্তির শুধু একটি প্রদর্শনী দেখিয়েছে। সুযোগ পেলে তারা আমাদের প্রকৃত ক্ষমতা দেখাবে।”
রাজনাথ সিং সেনাদের উদ্দেশে আহ্বান জানান সর্বদা সতর্ক থাকতে এবং দেশের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ভারতকে ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও আত্মনির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অপরিহার্য।
ত্রিশূল মহড়া কী? Rajnath Singh Operation Sindoor Warning
ভারত পশ্চিম সীমান্ত এবং আরব সাগরের উপকূলে শুরু করেছে বিশাল যৌথ ত্রিসেনা মহড়া— ‘এক্সারসাইজ ত্রিশূল ২০২৫’। এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে ভারতীয় সেনা, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী। মহড়াটি চলবে ৩০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। এর উদ্দেশ্য— যৌথ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা, দ্রুত মোতায়েন ও সামুদ্রিক আধিপত্যের অনুশীলন।
তবে এই মহড়া ঘিরে পাকিস্তানে তীব্র স্নায়ুচাপ। পাঁচ দিনের মধ্যে দু’বার নোটাম (Notice to Airmen) জারি করেছে ইসলামাবাদ, যা বিশ্লেষকদের মতে, আতঙ্ক ও সতর্কতারই ইঙ্গিত। সর্বশেষ নোটাম অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের দক্ষিণ ও উপকূলীয় আকাশসীমার বড় অংশ বন্ধ থাকবে।
শীর্ষ গুপ্তচর সূত্রের দাবি, পাকিস্তান সম্ভবত আরব সাগরে নৌবাহিনীর লাইভ-ফায়ারিং মহড়া বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে সোনমিয়ানি রেঞ্জ ও সির ক্রিকের আশেপাশে। সূত্রমতে, রাওয়ালপিন্ডিতে “বাড়তে থাকা আশঙ্কা” হল, ভারত দক্ষিণ দিকের বায়ুসেনা ঘাঁটি ও নৌবহরের উপর নির্ভুল আঘাত হানতে পারে।
বিশ্লেষণ:
‘ত্রিশূল ২০২৫’ শুধু একটি সামরিক মহড়া নয়, বরং ভারতীয় প্রতিরক্ষার কৌশলগত বার্তা, সীমান্তে শান্তি চাই, কিন্তু প্ররোচনার উত্তর হবে জবাবী শক্তিতে। আর পাকিস্তানের আতঙ্ক-প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে, দিল্লির এই বার্তা ইসলামাবাদের ক্ষমতার করিডরে গভীরভাবে পৌঁছে গিয়েছে।



