HomeBharatআমেরিকা রাশিয়ার জ্বালানি নেয়, ভারত কেন নয়? কূটনৈতিক আক্রমণ পুতিনের

আমেরিকা রাশিয়ার জ্বালানি নেয়, ভারত কেন নয়? কূটনৈতিক আক্রমণ পুতিনের

- Advertisement -

রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পরস্পরবিরোধী অবস্থানকে কূটনৈতিকভাবে আঘাত করলেন ভ্লাদিমির পুতিন। দু’দিনের ভারত সফরে আসার ঠিক আগে, মস্কোয় ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমেরিকা যখন আমাদের কাছ থেকে জ্বালানি কিনছে, তখন ভারতকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার প্রশ্নই ওঠে না।”

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়া থেকে তেল কেনার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবু সেই একই আমেরিকা চুপিসারে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আমদানি অব্যাহত রেখেছে— এই বাস্তবতাই তুলে ধরলেন পুতিন।

   

ইউরেনিয়াম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞাহীন আমেরিকা— পুতিনের তির্যক প্রশ্ন

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার মোট ইউরেনিয়াম রফতানির প্রায় এক-চতুর্থাংশই পৌঁছয় আমেরিকার পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে। এই তথ্য সামনে এনে পুতিন বলেন,
“আমেরিকার পরমাণুকেন্দ্রগুলো সচল রাখতে রাশিয়ার ইউরেনিয়ামই প্রধান ভরসা। তখন নিষেধাজ্ঞা কোথায় গেল?”

এছাড়া ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনতে থাকায় ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। পুতিনের মতে, এই নীতিই প্রকৃত দ্বিচারিতা৷ তিনি বলেন, “একদিকে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে নিজেদের স্বার্থে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা ভারতের প্রতি কী বার্তা দেয়?”

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও জানান, এই বৈপরীত্য নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে রাশিয়া প্রস্তুত।
“বিষয়টি আলোচনার দাবি রাখে। আমরা প্রস্তুত আছি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ে।”

ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে সমালোচনা নয়, কিন্তু বার্তা স্পষ্ট

যদিও ট্রাম্প নীতিকে সরাসরি ভুল বলেননি পুতিন। বরং কূটনৈতিক ভঙ্গিতে মন্তব্য করেন—
“উনি পরামর্শদাতাদের অভিমতেই কাজ করেন। হয়তো তাঁরা বিশ্বাস করেন, বাণিজ্যসঙ্গীদের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপালে আমেরিকার অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।”
তবে সঙ্গে সঙ্গেই জানান, রাশিয়া কখনও এমন পথে হাঁটবে না৷ “আমাদের বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, এতে অনিশ্চয়তা বাড়ে। আমরা এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেব না— ভবিষ্যতেও নয়।”

দিল্লিতে পুতিন— রাত্রেই মোদীর সঙ্গে নৈশভোজ

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লির পালমে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই পুতিন সরাসরি যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে। দু’জনকে একই গাড়িতে দেখা যায়— যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

রাতে ৭ লোককল্যাণ মার্গে পুতিনের সম্মানে বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেন মোদী।

শুক্রবার পুতিনের কর্মসূচি ঘনিষ্ঠ ও প্রতীকপূর্ণ—

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য

প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং বাণিজ্য-সহযোগিতা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

পুতিনের এই সফর ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের কূটনৈতিক ভারসাম্য নতুন করে মজবুত করবে বলেই মনে করছে দক্ষিণ এশিয়া-ইউরেশিয়া বিশেষজ্ঞ মহল।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular