ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হলো “এক ব্যক্তি, এক ভোট” নীতি। এই মৌলিক নীতির সুরক্ষার দাবিতে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ায়নাডের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi) একটি নতুন উদ্যোগ চালু করেন যা —‘ভোট চুরি’ স্বাক্ষর অভিযান। এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করা এবং সংবিধানের সেই মূল্যবোধগুলোকে রক্ষা করা, যেগুলি ভারতকে একটি প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে পরিণত করেছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এ দিন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা প্রতিটি ব্যক্তির ভোটাধিকার ও আমাদের প্রিয় সংবিধানের মূল্যবোধ রক্ষার জন্য লড়ছি। এই মূল্যবোধগুলোই আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।” তিনি আরও জানান, ‘যেমন প্রতিটি ভোট গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই সংবিধানের পক্ষে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকটি মানুষের স্বাক্ষরও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
এই অভিযানের মাধ্যমে তিনি সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে সবাই এগিয়ে এসে এই স্বাক্ষর অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং গণতন্ত্রের প্রতি তাদের সমর্থন জানান। প্রিয়াঙ্কার মতে, শুধু ভোট দেওয়া নয়, বরং ভোটের অধিকার রক্ষা করাও নাগরিকদের দায়িত্ব। তাই এই স্বাক্ষর অভিযানকে তিনি এক বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ দিতে চান, যেখানে প্রতিটি সচেতন নাগরিক নিজেকে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার যোদ্ধা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
কংগ্রেসের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক মহল একটি তাৎপর্যপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনে “ভোট চুরি” বা ভোট কারচুপির অভিযোগ সামনে আসায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভোটাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এই উদ্যোগ সেই প্রেক্ষাপটেই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বোঝাতে চাইছেন, এই আন্দোলন কেবল কংগ্রেসের নয়, সমগ্র দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের।
অভিযানটির মূল ফোকাস হলো গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াইকে একটি যৌথ উদ্যোগে পরিণত করা। স্বাক্ষর সংগ্রহের মাধ্যমে যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তা হলো—নাগরিকেরা যদি একত্রিত হন, তবে কোনও শক্তিই গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই স্বাক্ষর অভিযান দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ও জেলায় পরিচালিত হবে, যাতে সর্বস্তরের মানুষ এতে যুক্ত হতে পারেন।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আরও উল্লেখ করেছেন, “আমাদের সংবিধান শুধু একটি বই নয়, এটি প্রতিটি ভারতীয়ের অধিকার ও মর্যাদার প্রতীক। আমরা যদি আজ এটি রক্ষা না করি, আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা দায়ী থাকব।” তাঁর এই বার্তায় স্পষ্ট যে, তিনি কেবল একটি রাজনৈতিক ইস্যু তুলছেন না, বরং সংবিধানের মূল চেতনা ও ন্যায়বোধের প্রশ্নকে সামনে আনছেন।