জুটল না মন্ত্রিত্ব! বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ কি বিজেপি ছাড়ছেন?

ইঙ্গিত আগেই (Saumitra Khan) দিয়েছিলেন। তিনি যে মন্ত্রিত্বের প্রত্যাশী সরাসরি তা জানিয়েও দিয়েছিলেন দলকে। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে মন্ত্রিত্ব দিল না বিজেপি। এবার কি তাহলে…

bjp-mp-saumitra-khan-declares-loyalty-to-narendra-modi-rejects-tmc-comeback-facebook-post

ইঙ্গিত আগেই (Saumitra Khan) দিয়েছিলেন। তিনি যে মন্ত্রিত্বের প্রত্যাশী সরাসরি তা জানিয়েও দিয়েছিলেন দলকে। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে মন্ত্রিত্ব দিল না বিজেপি। এবার কি তাহলে দল ছাড়তে চলেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ? আপাতত এ নিয়ে সৌমিত্র খাঁ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। ফেসবুক পেজে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন তিনি। বিজেপি সূত্রে খবর, সৌমিত্রর মান ভাঙাতে তাঁকে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি করা হতে পারে।

প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ৮ জুন রাতে করা ফেসবুক পোস্টে সৌমিত্র সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বিজেপিতেই থাকছেন। একই সঙ্গে এদিন সকালে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ নরেন্দ্র মোদীর একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে, মোদী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মহাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

   

এই মুহূর্তে রাজ্যে পুরভোট হলে কী হবে ফলাফল, উঠে এল চমকপ্রদ তথ্য

৮ জুন করা ফেসবুক পোস্টে সুকান্ত লিখেছেন, ‘যাঁরা মিথ্যে প্রেক্ষাপট তৈরি করে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে জানাতে চাই, আমি ছিলাম পার্লামেন্টের প্রথম নির্বাচিত সদস্য যে ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি তৎকালীন দলের সমস্ত সাংগঠনিক অবস্থান ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। তারপর থেকে আমি দলের জন্য এক নিষ্ঠাবান কর্মী এবং শ্রী নরেন্দ্র মোদীজীর নির্দেশ ও নেতৃত্বে কাজ করেছি। আমার যোগদানের পর থেকে কিছু জন আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, যাঁরা পর্দার আড়ালে থেকে এই খেলাটি খেলছেন তাঁদের জন্য আমি বলতে চাই যে, সৌমিত্র খাঁ কখনই বিক্রি হবে না এবং রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত বাংলার মানুষের জন্য লড়াই করে যাবে। আমি বিজেপির সাথে রয়েছি এবং শ্রী নরেন্দ্র মোদীজীর নেতৃত্বে মানুষের সেবা করতে থাকব। যাতে আমরা বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।ভারত মাতার জয় হোক, বিজেপি জিন্দাবাদ।’

সম্প্রতি মন্ত্রিত্ব নিয়ে মুখ খোলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, মন্ত্রিত্ব ব্যাপারটা দলের ওপর নির্ভর করে। তবে আমি আশাবাদী। কারণ আমার মতো ছেলেদের যদি না দেওয়া হয়, রাঢ় বাংলায় আসন জেতার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। নেতারা যদি সঠিক যুবাদের বেছে নিতে না পারে তাহলে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে।

পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসেবে কাকে পছন্দ? কার নাম বললেন সুকান্ত মজুমদার

ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা করার পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন সৌমিত্র। তিনি বলেন, রাজ্য নেতৃত্বের কিছু সিদ্ধান্তের জন্য বিজেপি হেরেছে। অযোগ্য লোককে উঁচু পদে বসিয়ে রাখলে খারাপ ফল হবেই। অভিষেক ভালো কাজ করছেন বলেই তৃণমূল এমন ফল করেছে। অনেকেই অভিষেকের স্ট্রাটেজি বুঝতে পারেননি।

তবে রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা করলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে প্রশংশায় ভরিয়ে দেন সৌমিত্র। বিষ্ণুপুরের সাংসদের কথায়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাদের সবরকম ভাবেই সাহায্য করেছে। আরএসএস না থাকলে এই ১২টা আসনও আমরা পেতাম না।

‘এনডিএ সরকার টিকবে না, ক্ষমতায় আসবে ইন্ডিয়া’, তারিখ বলে দিলেন মমতা!

বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে এবার বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। আর তৃণমূলের টিকিটে এই কেন্দ্রে ভোটে লড়েছিলেন সৌমিত্রর প্রাক্তন স্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য সুজাতা মণ্ডল। সৌমিত্র খাঁ এবং সুজাতা মণ্ডলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে এই কেন্দ্রে। মাত্র ৫,৫৬৭ ভোটে জয় পান সৌমিত্র।

রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে কংগ্রেসে ছিলেন সৌমিত্র খাঁ। কোতুলপুর থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়কও হন সৌমিত্র। ২০১৩ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণপুর থেকে জিতে সাংসদ হন সৌমিত্র। ২০১৯ সালে আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ সৌমিত্র।

প্রত্যাখ্যাত ‘বহিরাগত’-র রণেভঙ্গ, রাজনীতি ছাড়লেন ওডিশার নবীন ঘনিষ্ঠ পান্ডিয়ান

ফুল বদলের পরই সৌমিত্র বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে মামলার দায়ের হয়। সংসদীয় এলাকার একটা অংশে সৌমিত্রর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সময় সৌমিত্রর হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি না করেও ৭৮০০০ ভোটে জয় পান তিনি।