বাংলাদেশি নাগরিক ফেরত! সূর্যোদয়ের আগেই সমাপ্ত মিশন ‘রিটার্ন টিকিট’

ভোররাতে ১৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাল অসম সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানালেন—“Mission Return Ticket completed before sunrise!”

সংবাদদাতা, গুয়াহাটি: অসমে ফের কড়া পদক্ষেপ রাজ্য প্রশাসনের। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বৃহস্পতিবার ভোররাতে এক্স (X)-এ ঘোষণা করেন, “Mission ‘Return Ticket’ completed before sunrise!” অর্থাৎ সূর্য ওঠার আগেই ‘রিটার্ন টিকিট’ মিশন সম্পূর্ণ।

Advertisements

তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে ২টা ১৫ মিনিটে মোট ১৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন শ্রীভূমি এলাকার এবং ৫ জন কাচাড় জেলার বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মহিষাসন সীমান্ত চৌকির (Mahishasan BOP) মাধ্যমে বিএসএফ এবং অসম পুলিশের যৌথ উদ্যোগে দেশে ফেরানো হয়।

   

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তার পোস্টে লিখেছেন, “At 2:15 AM, 19 Bangladeshi nationals (14-Sribhumi, 5-Cachar) were escorted back home via Mahishasan BOP — courtesy of Assam Police & BSF’s teamwork. No OTT suspense here — just swift action, border edition!” অর্থাৎ, “কোনও OTT ধাঁচের রহস্য নয়, এটি ছিল একদম বাস্তব অ্যাকশন—সীমানার সংস্করণ।”

অসম সরকার গত কয়েক মাস ধরেই সীমান্ত নিরাপত্তা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষত, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা কাচাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা তারই এক অংশ।

প্রসঙ্গত, মহিষাসন সীমান্ত চৌকি আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের অন্যতম সক্রিয় বর্ডার পয়েন্ট। এখানে প্রায়ই বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশের যৌথ টহল চালানো হয় যাতে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পাচারের ঘটনা ঠেকানো যায়।

Advertisements

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের সনাক্ত করার জন্য বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে ধরা পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গত কয়েক মাসে বহুবারই বলেছেন, “অসমে বেআইনি অনুপ্রবেশের কোনও স্থান নেই। রাজ্যের নিরাপত্তা ও সামাজিক ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদের সরকার সবসময় সতর্ক।” তাঁর এই ‘Return Ticket’ মিশন সেই কঠোর অবস্থানেরই প্রতিফলন।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্টটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়েছে। অনেকে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের তৎপরতার প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ আবার লিখেছেন, “এটাই হওয়া উচিত দ্রুত প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া।” অন্যদিকে, কিছু মানবাধিকার সংগঠন পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রত্যেক ফেরত পাঠানো ব্যক্তির সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হয়েছে।

তবে নিঃসন্দেহে, এই পদক্ষেপে অসম সরকার আবারও বার্তা দিয়েছে—অবৈধ অনুপ্রবেশে কোনও রকম শিথিলতা দেখানো হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, “No OTT suspense here — just swift action.” অর্থাৎ, বাস্তবের অ্যাকশন সিনেমায় রূপ নিচ্ছে সীমান্ত সুরক্ষার লড়াই।