Naga Peace Talk: মেশিনগান নিয়ে নাগা আর্মি পাহারায়, ভারতীয় প্রতিনিধিকে প্রথমবার ঢুকতে অনুমতি

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার ভারত সরকারের প্রতিনিধি প্রবেশাধিকার পেলেন সশস্ত্র নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এনএসসিএন (আই-এম) সদর কার্যালয় ক্যাম্প হেব্রনে। নাগা শান্তি আলোচনার (Naga…

প্রসেনজিৎ চৌধুরী:
স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার ভারত সরকারের প্রতিনিধি প্রবেশাধিকার পেলেন সশস্ত্র নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এনএসসিএন (আই-এম) সদর কার্যালয় ক্যাম্প হেব্রনে। নাগা শান্তি আলোচনার (Naga Peace Talk) ক্ষেত্রে তৈরি হলো ঐতিহাসিক মুহূর্ত

নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরের কাছে এই অঞ্চলে ভারত সরকারের কোনও আইন খাটে না। এ যে ভারতের মধ্যে এক ভিনদেশ! ক্যাম্প হেব্রনের কড়া নিরাপত্তায় থাকে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষীদল নাগা আর্মি। অত্যাধুনিক ভারি আগ্নেয়াস্ত্র, বিমান ধংসকারী অস্ত্র দিয়ে ঘেরা ন্যাশনালিস্ট সোশালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগালিম (আইজাক-মুইভা) গোষ্ঠীর সদর কার্যালয় ঘিরে বহু জল্পনা। সেখানেই প্রথমবার ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা পৌঁছে গেছেন।

ক্যাম্প হেব্রন ভারতীয় প্রতিনিধি এ কে মিশ্রকে স্বাগত জানান এনএসসিএন (আই-এম) গোষ্ঠীর প্রধান টি মুইভা। এর ফলে ভারত সরকার ও নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে শান্তি বৈঠকের পথ আরও সুগম হলো বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও নাগা নেতা মুইভা নিজেদের পতাকা বজায় রাখতে অনড়। এ নিয়ে দিল্লিতে দীর্ঘ আলোচনা চলেছে।

নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিও রিও ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মধ্যে সম্প্রতি এই শান্তি বৈঠক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এর পর ক্যাম্প হেব্রনে ভারতীয় প্রতিনিধিকে প্রবেশাধিকার দেন নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা টি মুইভা। জানা যাচ্ছে, ক্যাম্প হেব্রনে থেকে টানা কয়েকদিন শান্তি বৈঠকের পর্বগুলি নিয়ে আলোচনা করবেন এ কে মিশ্র। এনএসসিএন (আই-এম) সংগঠনটির অপর প্রধান আইজ্যাক চিচিসু আগেই প্রয়াত।

সশস্ত্র নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য পৃথক স্বশসিত ‘নাগালিম’ (নাগাভূমি) গঠন। এই লক্ষ্যে স্বাধীনতার পর থেকে দশকের পর দশক রক্তাক্ত পথ নিয়েছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এই বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলনের তিন নেতা এস এস খাপলাং, আইজ্যাক চিচিসু ও টি মুইভা। তিনজনে গঠন করেছিলেন এনএসসিএন গোষ্ঠী। খাপলাং পরে পৃথক গোষ্ঠী গড়েন। তার গোষ্ঠী এনএসসিএন (কে) একের পর এক নাশকতায় জড়িত। মায়ানমারে খাপলাং প্রয়াত হন কয়েক বছর আগে। তাঁর সংগঠনটি কয়েকটি ভাগে ভেঙেছে। তবে খাপলাং ধারার উত্তরসূরী নিকিসুমি অধরা। তার নেতৃত্বে পরপর নাশকতা হয়েছে মনিপুর, নাগাল্যান্ডে।

নাগা সশস্ত্র আন্দোলনকে কোনওভাবেই দমন করতে পারেনি কোনও কেন্দ্রীয় সরকার। উত্তর পূর্ব ভারতের ভয়ঙ্করতম বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে সশস্ত্র নাগা গোষ্ঠী বারবার গণহত্যা ও রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে। সেনা বাহিনীর উপর একাধিকবার হামলায় জড়িত নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। প্রতিবেশি দেশ মায়ানমার থেকে তাদের হামলা হয়। আর নাগাল্যান্ডের মধ্যেই তারা তৈরি করে রেখেছে সদর কার্যালয়। যেখানে এতদিন কোনও ভারতীয় সরকারি প্রতিনিধির প্রবেশাধিকার ছিলনা।