মণিপুরের নোনে জেলায় ইজাই নদী ও পার্বত্য বিপজ্জনক ভৌগোলিক এলাকায় বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ। ধস নেমে শ্রমিক ও টেরিটোরিয়াল আর্মির জওয়ানরা চাপা পড়েছেন। বহু মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। সার সার দেহ ধসের তলা থেকে বের করছেন উদ্ধারকারীরা। বুধবার রাতে নোনে জেলার টুপুল স্টেশনের কাছে ধস নেমে ((Manipur Noney Tragedy) এলাকাটি এখন মৃত্যুপুরী। মৃতদেহ পচে যাওয়ায় বিষাক্ত পরিবেশ।
পড়ুন: Manipur Noney Tragedy: মণিপুর থেকে দার্জিলিংয়ে আসবে সার সার জওয়ানদের দেহ, বহু নিখোঁজ
ঘটনাস্থলে গিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং উত্তর পূর্ব রেলকে অভিযোগের কাঠগড়া়য় দাঁড় করিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, টুপুল স্টেশন এলাকার মাটি পরীক্ষায় গাফিলতি হয়েছে। মাটি নরম জেনেও কেন সেখানে শ্রমিক ও জওয়ানদের ক্যাম্প করা হয়েছিল প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
উঠছে আরও প্রশ্ন। টানা অতি ভারী বর্ষণও ধস নামতে পারে এমন সতর্কতা জুন মাস থেকেই দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ। পূর্বাভাস মিলিয়ে অতি বৃষ্টি শুরু হয়। অসমে বন্যা ভয়াবহ আকার নেয়। আর মণিপুরে পার্বত্য এলাকায় অতি বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় ধস নামে।
অভিযোগ, এই দুর্যোগের মাঝে কেনও শ্রমিক ও জওয়ানদের দুটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। বুধবার রাতে টুপুল স্টেশনের কাছে সেই ক্যাম্প দুটির উপর মাটি ও পাথরের ধস গড়িয়ে আসে। কয়েকজন কোনওরকমে বাঁচলেও অধিকাংশ ধসে চাপা পড়েন।
প্রশ্ন উঠছে কোন যুক্তিতে বর্ষার সময় কাজ চালু ছিল।কেনো জওয়ান ও শ্রমিকদের আগে থেকে সরানো হয়নি। উত্তর পূর্ব রেলকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
আরও পড়ুন: Manipur Noney Tragedy: বিশ্বের সর্বোচ্চ নোনে রেলসেতু, বহু শ্রমিক-জওয়ানের মৃত্যুর নীরব সাক্ষী
মণিপুরে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু নির্মাণ নিয়ে কেন্দ্র সরকার বারবার প্রচার করে। নোনে জেলার টুপুলে উত্তর পূর্ব রেলের জিরিবাম-টুপুল-ইম্ফল-ইম্ফল বিভাগের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ টুপুল স্টেশনের কাছে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু নির্মাণ কাজ চলছে। ১৪১ মিটার উঁচু এই সেতু জটিল পার্বত্য খাঁজ বরাবর বানানো হচ্ছে। এটি টেক্কা দিয়েছে উচ্চতায় ইউরোপের মন্টেনেগ্রো দেশের ১৩৯ মিটার উঁচু রেলসেতুকে।
এই সেতু নির্মাণের দায়িত্বে উত্তর পূর্ব রেল। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক প্রতিকুলতার সঙ্গে প্রযুক্তি বিজ্ঞানের তীব্র লড়াই চলেছে। ভবিষ্যতে সেই লড়াইয়ের এক উদাহরণ হয়ে যাবে দুনিয়ার সর্বোচ্চ রেলসেতু। মণিপুরে নির্মীয়মান এই সেতু থেকে গেল বহু শ্রমিক ও টেরিটোরিয়াল আর্মি জওয়ানদের মৃত্যুর নীরব সাক্ষী হয়ে। বিখ্যাত নোনে সেতুর ইতিহাসে লেখা থাকবে প্রকৃতির রুদ্র রূপের কথা।