পহেলগাঁও কাণ্ডে যুক্ত নেই স্থানীয়রা, দাবি আব্দুল্লাহর

Abdullah new statement on pahalgaam attack

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ (Abdullah) দাবি করেছেন যে গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও তে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো সরাসরি যোগ ছিল না। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করলেও, ওমর আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন যে এই ব্যক্তিরা জঙ্গিদের হুমকির মুখে বাধ্য হয়ে তাঁদের সাহায্য করেছিলেন।

Advertisements

এই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছিলেন, যা জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আজ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই হামলার পেছনে যারা গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছে, তারা সবাই বহিরাগত জঙ্গি। স্থানীয় কেউ এতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল না।” আবদুল্লাহ আরও বলেন জঙ্গিদের বন্দুকের সামনে ধৃত দের কিছুই করার ছিলনা। ওরা বাধ্য হয়ে জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছিল

   

পহেলগাঁও হামলার পটভূমি (Abdullah)

পহেলগাঁও, জম্মু ও কাশ্মীরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যেখানে ২২ এপ্রিল পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিরা একটি ভয়াবহ হামলা চালায়। এই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটক। এই ঘটনা রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর (Abdullah)’ শুরু করে, যার অধীনে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি জঙ্গি শিবির ধ্বংস করা হয়। ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, “আমি মেজবান হিসেবে এই পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম। তাঁদের পরিবারের কাছে আমি কীভাবে ক্ষমা চাইব, আমার কাছে কোনো শব্দ নেই।” তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের প্রতি দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, “কাশ্মীরিদের শত্রু হিসেবে না দেখার জন্য আমি অনুরোধ করছি।”

এনআইএ-র তদন্ত ও গ্রেপ্তার

জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) হামলার তদন্তে নেমে দুজন স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে, যাঁদের উপর জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল্লাহ (Abdullah) জানিয়েছেন যে এই ব্যক্তিরা জঙ্গিদের হুমকির মুখে বাধ্য হয়ে তাঁদের সাহায্য করেছিলেন।

তিনি বলেন, “এই ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁদের জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তারা বাধ্য হয়েছিলেন।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্থানীয় জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অযথা বিদ্বেষ ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এনআইএ-র তদন্তে এটাও প্রকাশ পেয়েছে যে হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি ছিল। তদন্তকারী সংস্থা এই হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এই হামলার পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিহত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকার খবর পাওয়া গেছে, যা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে সরাসরি সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।

অপারেশন সিঁদুর ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

পহেলগাঁও হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করে, যা ৭ মে থেকে শুরু হয়। এই অপারেশনের মাধ্যমে পাকিস্তান ও পিওকে-তে নয়টি জঙ্গি শিবির ধ্বংস করা হয়। এই অপারেশনের সময় পাকিস্তান ৩০০-৪০০টি ড্রোন ব্যবহার করে ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরীক্ষা নিয়েছিল।

Advertisements

এই ঘটনার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জরুরি ক্রয় প্রক্রিয়ার (ইমার্জেন্সি প্রকিউরমেন্ট) ষষ্ঠ পর্যায়ে ১৩টি চুক্তি সম্পন্ন করেছে, যার মাধ্যমে ভীতি-বিরোধী অভিযানের জন্য উন্নত সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ড্রোন ডিটেকশন সিস্টেম, লয়টারিং মিউনিশন, এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।

ওমর আব্দুল্লাহর ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া

ওমর আব্দুল্লাহ (Abdullah) এই হামলার পর থেকে সক্রিয়ভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। তিনি জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় বলেন, “আমার দায়িত্ব ছিল এই পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া, কিন্তু আমি তা করতে পারিনি।” তিনি এই ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই জঙ্গিদের পক্ষে ছিলাম না,আর থাকব না।”

স্থানীয় জনগণের প্রতি তিনি দেশবাসীকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে কাশ্মীরিদের শত্রু হিসেবে দেখা উচিত নয়। তাঁর এই মন্তব্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন এবং সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রচেষ্টার প্রতিফলন।

লোন নাকচ হচ্ছে বারবার? সাবধান হোন এই ৫টি মিথ্যে বিশ্বাস থেকে

সরকারি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Abdullah) এবং এনআইএ এই হামলার তদন্তে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। স্থানীয় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী পহেলগাঁও সহ জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল্লাহ পর্যটন শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা পর্যটনকে পুনরুদ্ধার করব এবং কাশ্মীরকে আবার নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলব।”

পহেলগাঁও হামলা জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জটিলতা এবং পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরেছে। ওমর আব্দুল্লাহর(Abdullah) বক্তব্য যথেষ্ট বিতর্কিত এবং এর আগেও জঙ্গি হামলার ইতিহাসে জম্মু কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের যোগ ছিল। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে রাজ্যের ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের কাছে উন্নত করতেই আবদুল্লাহর এই অজুহাত।