Tripura: বাংলাদেশ থেকে JMB জঙ্গি ঢুকছে ভারতে, ধৃতদের বয়ানে চাঞ্চল্য

পার্বত্য ত্রিপুরার আন্তর্জাতিক সীমানা পার করে ভারতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশি জঙ্গিরা। ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সর্বত্র। পার্বত্য এলাকার সীমান্তে সুরক্ষার কড়াকড়ি না থাকার সুযোগ নিয়ে চলছে…

Jmb militant arrested from tripura

পার্বত্য ত্রিপুরার আন্তর্জাতিক সীমানা পার করে ভারতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশি জঙ্গিরা। ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সর্বত্র। পার্বত্য এলাকার সীমান্তে সুরক্ষার কড়াকড়ি না থাকার সুযোগ নিয়ে চলছে নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি। যদিও ত্রিপুরা পুলিশের সাহায্যে সেই নেটওয়ার্ক ভাঙতে সক্ষম হলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিনের সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তিকে পাকড়াও করা হল ত্রিপুরার (Tripura) সোনামুড়া থেকে।

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া এলাকা থেকে ধরা করা হয়েছে ওই তিন ব্যক্তিকে। ধৃতেরা হল ইমরান হোসেন, হামিদ আলি এবং আব্দুল কাশিম। এদের মধ্যে আব্দুল কাশিম মাদ্রাসার শিক্ষক। ধৃতেরা সকলেই বাংলাদেশের জামাত উল মুজাহিদিন গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দাবি গোয়েন্দাদের। এই জঙ্গিদের জাল যে অনেক দূরে বিস্তৃত। সুদূর মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পরে ত্রিপুরার সুতর পায় পুলিশ সেই সূত্রেই উঠে আসে সোনামুড়ার নাম।

   

ত্রিপুরাকে যে জঙ্গিরা সেফ করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে তা জানা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের থেকেই। সম্প্রতি অসম, মধ্যপ্রদেশের ভোপাল এবং এ পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় ধৃত বেশ কিছু জঙ্গিকে জেরা করে এই তথ্য পেয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। গত ১৩ মার্চ ভোপাল থেকে জাহির উদ্দিন এবং অখিল আহমেদ নামক দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা। ওই দুই বাংলাদেশি জামাত জঙ্গি জেরায় জনায় যে তারা ২০২০ সালের শুরুর দিকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখান থেকে অসম-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে মধ্যপ্রদেশ পোঁছায়। নাশকতার জাল বিস্তার করতে ওই দুই জনের সঙ্গে আরও কয়েক জন ভারতে প্রবেশ করেছে বলেও জানায় তারা।

ওই দুই ধৃতের থেকেই ত্রিপুরায় জঙ্গি ঘাঁটির প্রসঙ্গে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সিপাহীজলার খাদ্যখোলা গ্রামের ২৪ বছর বয়সী ইমরান হোসেনের নাম উঠে আসে জেরায়। সেই সূত্রেই ইমরানকে আটক করে বিশালগড় পুলিশ। তারপরে হামিদ আলি এবং আব্দুল কাশেমের নাম জানা যায় ইমরানকে জেরা করে। শনিবার রাতেই ওই তিন জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রবিবার দিনভর চলে জেরা। সোমোার তাদের আদালতে তোলা হলে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ধৃতদের মধ্যে আব্দুল কাশিম মাদ্রাসার শিক্ষক। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই চলছিল জঙ্গিবাদের প্রচার এবং গোপন পসার। যা ভাঙতে সক্ষম হয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ধৃতদের পাকরাও করতে ত্রিপুরা রাজ্য পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। গত মাসের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকড়া থেকে আমিরুদ্দিন নামে মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। হাওড়ায় বাংলাদেশি জঙ্গিদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ওই মাদ্রাসা শিক্ষক।

খুব স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে মাদ্রাসা এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে জন্ম নিচ্ছে নানাবিধ জল্পনা। সেই সঙ্গে জোরাল হচ্ছে বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমার দাবি। তিনি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে মাদ্রাসা বন্ধের দাবি করেছিলেন। যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়। হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয় বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমাকে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয় ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তাঁর বক্তব্যের দুই সপ্তাহ পরেই এই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার সেই বিতর্ককে আরও একবার উসকে দিল।

এর আগে ত্রিপুরায় গত বামফ্রন্ট জমানায় জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের বিষদাঁত ভেঙেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বিজেপি জোট সরকারের আমলে প্রথমে এনএলএফটি গুলি চালিয়ে বিএসএফ জওয়ানকে খুন করে। এর পকপর বারবার তাদের সক্রিয়তা উঠে এসেছে। মানিকবাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি সক্রিয়তা বাড়ছে। তার মন্তব্যের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নড়ে চড়ে বসে। বিজেপি আমলে বারবার জঙ্গি অনুপ্রবেশ হচ্ছে ত্রিপুরায়।