Jharkhand: গাছ নিয়ে ঝামেলা, দেড়শ জনের গণপ্রহারে মৃত এক

‘মব লিঞ্চিং’ বন্ধর সঙ্গে এখন সকলেই পরিচিত। একসময় যা ছিল আমেরিকার দুশ্চিন্তার কারণ, এখন তা ভারতের। ২০২২ সালে একদল লোকের হাতে নিহত হলেন এক ব্যক্তি।…

‘মব লিঞ্চিং’ বন্ধর সঙ্গে এখন সকলেই পরিচিত। একসময় যা ছিল আমেরিকার দুশ্চিন্তার কারণ, এখন তা ভারতের। ২০২২ সালে একদল লোকের হাতে নিহত হলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand)।

গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। যার সঙ্গে জড়িয়ে ধর্মীয় বিশ্বাস। মঙ্গলবার বিকেলে ঝাড়খণ্ডের সিমডেগায় গণপিটুনির ফলে মৃত্যু হল সঞ্জু প্রধান নামের এক ব্যক্তির। ১০০-১৫০ মানুষ জড়ো হয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এখানেই শেষ নয়, এরপর মৃতদেহ আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। জানা গিয়েছে, মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষজন একটি গাছকে পুজো করতেন। সেটিকেই কেটে ফেলেছিলেন। এর আগেও বেশ কিছু গাছ তিনি কেটেছিলেন বলে অভিযোগ। সঞ্জুর বিরুদ্ধে ক্রমে পুঞ্জিভূত হচ্ছিল ক্ষোভ। এদিন তার বহিঃপ্রকাশ।

প্রশ্ন উঠতে পারে, ভারতে মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা এতো বাড়ল কী করে? ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এরূপ ঘটনা। বিজেপি ক্ষমতায় আসার কয়েক দিন পরেই খবরের শিরোনামে মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা।

২০১৪ সালের ২ জুন উত্তেজিত জনতার হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন মহসিন শেখ। নমাজ পড়ে ফিরছিলেন। এমন সময় তাঁকে ঘিরে ধরেছিল হিন্দু রাষ্ট্র সেনার সদস্যরা। এরপর বেধড়ক মার। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু। মহসিনের মৃত্যুর প্রায় পরপরই উঠে আসে দাদরিতে দাদরির মহম্মদ আখলাক, আলওয়ারের পেহলু খানের মৃত্যুর খবর।

ভারত যখন অতিমারির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করছে, তখনও থামেনি বর্বরোচিত এই ঘটনা। গুরগাঁও-এর ২৫ বছর বয়সী আসিফ খান ও তাঁর দুই ভাই, মোরাদাবাদের মহম্মদ শাকির, ছত্তিসগড়ের ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি-সহ মোট পাঁচজন ৩২ বছর বয়সী বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ আলমগির-দের ঘটনা কিছু উদাহরণ মাত্র। উক্ত ব্যক্তিদের কেউ কেউ প্রাণে বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন, কেউ কেউ পারেননি। মৃত্যু হয়েছে একাধিকজনের। উল্লেখিত ঘটনামালা ছাড়াও ‘মব’-এর কীর্তির উদাহরণ রয়েছে বেশকিছু।

প্রধানমন্ত্রীর সামনে রাখা হয়েছিল মব লিঞ্চিং-এর প্রসঙ্গ। ২০১৯ সংসদে বলেছিলেন যে তিনি ব্যথিত। সেই সঙ্গে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিরোধী রাজনৈতিক দলকেও।

এমন কুকর্ম বা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে শাসক দলের কোনো নেতা মালা পরিয়ে সম্বর্ধনা দিচ্ছেন, এমন ছবিও ভারতবর্ষে আর বিরল নয়। ২০২১ সালে রাজ্য সভায় দাঁড়িয়ে এক মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, উত্তেজিত জনতার হাতে ঠিক কতজন প্রাণ হারিয়েছেন এমন তথ্য তাঁদের কাছে নেই।