জাভেদ হাবিব মামলায় বড় রায় আদালতের

jawed-habib-fraud-case-allahabad-high-court-protection

লখনউ, ১০ নভেম্বর: বহুদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় হেয়ারস্টাইলিস্ট জাভেদ হাবিব। এবার একগুচ্ছ প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর তাঁকে এবং তাঁর ছেলেকে বড় স্বস্তি দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না।

Advertisements

জাভেদ হাবিবের আইনজীবী শিখর নীলকণ্ঠ জানান, “জাভেদ হাবিব ও তাঁর পুত্রের বিরুদ্ধে প্রায় ৩২টি এফআইআর (FIR) দায়ের হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে সাইফুল নামে এক অভিযুক্তও রয়েছে। আমরা হাইকোর্টে গ্রেফতারির থেকে রক্ষার আবেদন করেছিলাম। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে।”

   

এই মামলার সূত্রপাত ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব নিয়ে একাধিক অভিযোগ থেকে। উত্তর প্রদেশসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্যালন ফ্র্যাঞ্চাইজ মালিকরা অভিযোগ করেছেন, জাভেদ হাবিবের সংস্থা তাঁদের কাছ থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিল, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুবিধা বা সেবা দেয়নি। অভিযোগকারীদের দাবি, তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অথচ সংস্থার তরফে কোনও ফেরত অর্থ বা প্রতিকার পাননি।

পারদ ১৩ ডিগ্রির পথে, তবু বৃষ্টির বাধায় শীত অনিশ্চিত বাংলায়

এই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজ্যের বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলা দায়ের হয়। এখন পর্যন্ত মোট ৩২টি এফআইআর রেকর্ড হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিটি মামলায় অভিযোগের ধরণ প্রায় একই—প্রতারণা, ভরসা ভঙ্গ এবং চুক্তিভঙ্গ। হাবিবের পক্ষের দাবি, এই অভিযোগগুলির অনেকটাই ভিত্তিহীন এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের দ্বারা প্ররোচিত।

Advertisements

আদালতে আইনজীবীরা যুক্তি দেন, “একই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জেলায় পৃথক এফআইআর করা আইনবিরোধী। এটি হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।” সেই যুক্তি বিবেচনা করেই এলাহাবাদ হাইকোর্টের বেঞ্চ আপাতত গ্রেফতারির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।

আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলাগুলির তদন্ত চলবে, তবে তদন্ত চলাকালীন জাভেদ হাবিব ও তাঁর পুত্রকে গ্রেফতার করা যাবে না। তাঁদের তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে এবং প্রয়োজনে উপস্থিত থাকতে হবে। এই রায় প্রকাশের পরেই হাবিবের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, তিনি বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইন অনুযায়ী লড়াই করবেন। তাঁর সংস্থা থেকেও জানানো হয়েছে, “আমরা সবসময় স্বচ্ছ ব্যবসায় বিশ্বাসী। কেউ যদি ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে ভুল তথ্য প্রচার করে, তার জবাব আমরা আইনি পথে দেব।”

উল্লেখ্য, জাভেদ হাবিব দেশের অন্যতম পরিচিত হেয়ারস্টাইলিস্ট, যিনি একসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বহু সেলিব্রিটিকে গ্রুম করেছেন। তাঁর নামে সারা দেশে প্রায় ৮০০-রও বেশি স্যালন এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাঁর ব্র্যান্ডের নাম একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছে। কিছুদিন আগেই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যেখানে তাঁকে এক অনুষ্ঠানে মহিলার চুলে থুথু ফেলে স্টাইল করতে দেখা যায়—যা নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল সমালোচনা হয়েছিল।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইকোর্টের এই রায় শুধুমাত্র অন্তর্বর্তী সুরক্ষা, অর্থাৎ চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো বাকি। তদন্তে যদি প্রতারণার প্রমাণ মেলে, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তবে আপাতত এই রায় জাভেদ হাবিব এবং তাঁর পরিবারের জন্য একটি বড় স্বস্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।