জেনেভা: জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (UNHRC) ৬০তম অধিবেশনের ৩৪তম মিটিং-এ তীব্র কূটনৈতিক বার্তা দিল ভারত। ভারতের কূটনীতিক মহম্মদ হুসেন সরাসরি পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলে বলেন, “যারা অন্যকে মানবাধিকার শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের আগে নিজেদের দেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন মোকাবেলা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের কাছে অত্যন্ত ব্যঙ্গাত্মক যে, পাকিস্তান মানবাধিকার নিয়ে অন্য দেশকে উপদেশ দিচ্ছে। তাদের উচিত প্রচারণা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিবর্তে নিজেদের মাটিতে সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করা।”
খাইবার পাখতুনখোয়ায় নিহত অন্তত ২৪ জন নাগরিক
এই মন্তব্য প্রকাশিত হল এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অন্তত ২৪ জন নাগরিক নিহত, যাদের মধ্যে নারীরাও রয়েছেন। যদিও নিহতদের সঙ্গে আরও ১৪ জঙ্গীর মৃত্যুর খবর মিলেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তীরাহ ভ্যালির মাতুর দারা এলাকায় বিমান হামলায় পাঁচটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য মহম্মদ ইকবাল খান আফ্রিদি ভিডিও বার্তায় বলেন, “বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। সরকারের কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যর্থতার কারণে জনগণ ক্ষুব্ধ।”
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন India slams Pakistan on minority persecution
UNHRC-এ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। জিওপলিটিক্যাল রিসার্চার জশ বোউস উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৫৮তম স্থানে রয়েছে।
USCIRF-এর ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, “ভুলধর্মের অভিযোগে ৭০০-এরও বেশি ব্যক্তি জেলে আছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
সামরিক অভিযানে উদ্বেগ
এছাড়া বলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযানের প্রভাবও গভীর উদ্বেগের বিষয়। মানবাধিকার কর্মী আরিফ আজাকিয়া বলেন, “বলুচিস্তান ও খাইবার অঞ্চলে বহু মানুষ নিখোঁজ ও নিহত হয়েছে। এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট প্রমাণ।”
ভারতের কূটনৈতিক বার্তা স্পষ্ট—দেশের নিরাপত্তা ও নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রত্যেক দেশের প্রধান দায়িত্ব। অন্যকে শিক্ষাদানের আগে নিজের দেশে ন্যায়পরায়ণতা প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য।