ফের ভয়াবহ বিপর্যয় আশঙ্কা হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে। আবহাওয়া বিভাগ (IMD) হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি রাজ্যে আগামী চারদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আইএমডি অনুসারে, ১৫ এবং ১৬ আগস্ট হিমাচল প্রদেশে এবং ১৫-১৯ আগস্টের মধ্যে উত্তরাখণ্ডে হালকা থেকে মাঝারি ভাবে বিক্ষিপ্ত থেকে ব্যাপক বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত এবং বিচ্ছিন্ন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷
এই পূর্বাভাস আসার পরেই হিমালয় অঞ্চলের দুই রাজ্যে ভূমিধস হবে বলে মলে করা হচ্ছে। এমনিতেই ব্যাপক ধসের জেরে পাহাড়ি এলাকায় হুড়মুড়িয়ে ভাঙছে ঘর বাড়ি। প্রকৃতির রক্ষা না করে নগরায়ণের কুফল পাচ্ছেন দুই রাজ্যবাসী। অভিযোগ, যেভাবে পর্যটন ব্যবসা ও জলবিদ্যুত কেন্দ্র গড়ে তোলা বা কারখানা তৈরি হচ্ছে তাতে বিপর্যয় আরও বাড়বে।
ইতিমধ্যেই অবিরাম বৃষ্টি এবং ভূমিধসে হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ধসের কারণে আহতদের উদ্ধার এবং ধ্বংসাবশেষ থেকে মৃতদেহ বের করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অবিরাম বৃষ্টির কারণে, হিমাচল প্রদেশের রাজ্য সরকার ১৬ আগস্ট সমস্ত স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় একটি আদেশে বলেছে যে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন কার্যক্রম ১৯ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ২০ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন। পিটিআই জানিয়েছে, আজ সিমলার সামার হিল এলাকায় একটি বিশাল ভূমিধসের খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। কুকুর ও উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে ছিল। আপাতত এ ঘটনায় কোনো হতাহতের বা আহত হওয়ার কোনো তাৎক্ষণিক খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে, মঙ্গলবার, ভারতীয় বিমান বাহিনী সিমলায় ভূমিধসের পরে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার জন্য একেবারে ১৮ জন সৈন্যকে এয়ারলিফট করেছিল।
মঙ্গলবার, ভূমিধসের কারণে সিমলার কৃষ্ণ নগর এলাকায় ৫ থেকে ৭টি বাড়ি ধসে পড়েছে। চলমান বৃষ্টির প্রকোপে হিমাচল জুড়ে কমপক্ষে ৫৫ জন প্রাণ হারিয়েছে, যা ভূমিধস, মেঘ বিস্ফোরণ এবং রাস্তা অবরোধের সূত্রপাত করেছে।
মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ উন্নয়ন ব্লকের হেলাং গ্রামে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। ঘটনার সময় বাড়িতে সাতজন শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। এসডিআরএফ অনুসারে, তিনজনকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ঘটনাস্থলেই একজন মারা যায়।
মঙ্গলবার উদ্ধারকর্মীরা ভূমিধসের কারণে ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করেছে। শিমলায় একটি ধসে পড়া শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকে একজনের লাশ বের করা হয়েছে এবং শহরে নতুন ভূমিধসে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে মোট ১৯টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, ১২টি সামার হিলের শিব মন্দির সাইটে, পাঁচটি ফাগলিতে এবং দুটি কৃষ্ণনগরে। সোমবার ধসে পড়া শিব মন্দিরে অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।