নকশাল দমনে স্বরাষ্ট্র দফতরের নয়া পদক্ষেপ ঔরঙ্গাবাদে

বিহারের ঔরঙ্গাবাদে (Aurangabad) কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং সাইট ইতিমধ্যে চালু হয়েছে এবং এখানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের (আরএএফ) একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে।…

Aurangabad CRPF deployment

বিহারের ঔরঙ্গাবাদে (Aurangabad) কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং সাইট ইতিমধ্যে চালু হয়েছে এবং এখানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের (আরএএফ) একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, ঔরঙ্গাবাদের এই ক্যাম্পিং সাইটটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ২৫টি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং সাইটের মধ্যে একটি, যা পর্যায়ক্রমে স্থাপন করা হচ্ছে।

ক্যাম্পের সীমানা দেওয়াল এবং ১২০ জনের জন্য একটি ব্যারাক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও, ক্যাম্পে রাস্তা, বিদ্যুৎ সংযোগের মতো মৌলিক পরিষেবাগুলি চালু করা হয়েছে। অন্যান্য পরিকাঠামোগত কাজও পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।

   

নিত্যানন্দ রাই রাজ্যসভায় বলেন, “ঔরঙ্গাবাদ, বিহারে সিআরপিএফের ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং সাইটটি কার্যকর রয়েছে। এখানে আরএএফ-এর একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। এই ক্যাম্প সরকারের ২৫টি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পিং সাইটের একটি, যা পর্যায়ক্রমে স্থাপিত হচ্ছে। ক্যাম্পের সীমানা দেওয়াল এবং ১২০ জনের জন্য একটি ব্যারাক নির্মিত হয়েছে। রাস্তা, বিদ্যুৎ ইত্যাদি মৌলিক পরিষেবাগুলি উপলব্ধ করা হয়েছে এবং অন্যান্য অবকাঠামোর কাজও পরিকল্পনায় রয়েছে।”

সিআরপিএফ ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী, যার মোট ২৪৭টি ব্যাটালিয়ন এবং ৩,১৩,৬৭৮ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। এই বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং নকশালবাদের মতো অশান্তি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরএএফ হলো সিআরপিএফের একটি বিশেষ ইউনিট, যা ১৯৯২ সালে গঠিত হয়েছিল। এই ইউনিটের ১৫টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং সংশ্লিষ্ট অশান্তি দমনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য প্রশিক্ষিত। আরএএফ-এর কাজ হলো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া, যা এটিকে ‘জিরো রেসপন্স ফোর্স’ হিসেবে পরিচিত করে।

ঔরঙ্গাবাদে এই ক্যাম্পিং সাইটের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ বিহারের এই অঞ্চলটি নকশালবাদের প্রভাবে প্রায়শই অশান্ত থাকে। সিআরপিএফের কমান্ডো ব্যাটালিয়ন ফর রিসোলিউট অ্যাকশন (কোবরা) ইউনিটও বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের মতো নকশাল প্রভাবিত রাজ্যগুলিতে সক্রিয়।

কোবরা ইউনিটগুলি গেরিলা যুদ্ধে প্রশিক্ষিত এবং নকশাল গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে অভিযানে বিশেষ দক্ষতা রাখে। ঔরঙ্গাবাদের ক্যাম্পে আরএএফ-এর মোতায়েন এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।

Advertisements

নিত্যানন্দ রাই আরও জানান, সরকার এই ধরনের ক্যাম্পিং সাইটগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ঔরঙ্গাবাদে সীমানা দেওয়াল এবং ব্যারাক নির্মাণের পাশাপাশি, ভবিষ্যতে আরও অবকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এই ক্যাম্পগুলি কেবল নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য আবাসন ও প্রশিক্ষণের সুবিধা প্রদান করে না, বরং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে অশান্তি দমন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিহারে সিআরপিএফের কার্যক্রম শুধু নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বাহিনীটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ভয় ও নকশালবাদী প্রভাব কমাতে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রম, শিক্ষা, এবং ডি-র‌্যাডিকালাইজেশন প্রোগ্রাম পরিচালনা করে।

এই কার্যক্রমগুলি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) স্কিমের অধীনে পরিচালিত হয়। ঔরঙ্গাবাদের ক্যাম্পটি এই ধরনের কার্যক্রমের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে, যা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সিআরপিএফের সম্পর্ক উন্নত করবে।

রাজ্যসভায় নিত্যানন্দ রাইয়ের এই বক্তব্য বিহারে সিআরপিএফের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার উপর আলোকপাত করে। ঔরঙ্গাবাদের এই ক্যাম্পিং সাইটটি কেবল নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য একটি কৌশলগত ঘাঁটি নয়, বরং এটি স্থানীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

“ভারত ভেসলিন দিয়ে…” চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রাক্তন পাক ক্রিকেটারের

আগামী দিনে এই ক্যাম্পের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং আরএএফ-এর কার্যক্রম কীভাবে এগোয়, তা নিয়ে সবার নজর থাকবে।এই উদ্যোগ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বিহারের মতো নকশাল প্রভাবিত রাজ্যগুলিতে সিআরপিএফ এবং আরএএফ-এর উপস্থিতি শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে সহায়ক হবে।