গত কয়েক দিন ধরে বেশ কয়েকটি রাজ্যের জ্বালানি পাম্পগুলিতে দীর্ঘ লাইন। তবে সেটি দাম বাড়ার আগে তেল ভরার তাড়া নয়। কেন্দ্রের নতুন হিট অ্যান্ড রান আইনের (Hit-And-Run Law) বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে ট্রাক চালকরা। এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন জ্বালানি বহনকারী ট্রাক ড্রাইভাররাও। তাতেই দেশজুড়ে জ্বালানি তেলের সংকটের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। মনে করা হচ্ছে যদি বিক্ষোভ দীর্ঘায়িত হয় অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
বিহার, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং ছত্তিশগড়সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভারতীয় বিচার বিধির হিট অ্যান্ড রান আইনের জন্য উচ্চ শাস্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী হিট অ্যান্ড রান মামলায় ১০ বছরের জেল ও সাত লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।
ট্রাক চালক, ক্যাব চালক এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক গাড়ির চালকদের দাবি, দুর্ঘটনা ঘটলে তারা কীভাবে এত বেশি জরিমানা দেবেন। অল পাঞ্জাব ট্রাক অপারেটর ইউনিয়নের সভাপতি হ্যাপি সিধু নতুন আইনটিকে “কালো আইন” বলে অভিহিত করেছেন যা পাঞ্জাবের ট্রাক চালকদের শেষ করবে বলে দাবি করেন।
পাম্পগুলিতে জ্বালানি সরবরাহকারী হাজার হাজার ট্যাঙ্কারের চালকরা এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছেন। তারা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায়, ইতিমধ্যে অনেক শহরে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে এবং অন্যান্য শহরে আগামী দিনগুলিতে একই রকম পরিস্থিতির পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। ঔরঙ্গাবাদের পেট্রোল পাম্প ডিলারদের একটি সংগঠন জানিয়েছে যে মঙ্গলবারের মধ্যে জেলার জ্বালানি পাম্পগুলি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আকিল আব্বাস বলেন, “নাসিকের পানওয়াড়ির জ্বালানি বহনকারী ট্যাঙ্কারের চালকরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন এবং জ্বালানি পুনরায় নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। নতুন আইনের বিরুদ্ধে ক্যাব অপারেটররা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার পর পর্যটকরা যানবাহন খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন।”
এক বাস চালক বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। আমাদের গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই আইন আমাদের জন্য অন্যায়। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাব।” মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ট্রাক চালক সৈয়দ ওয়াজেদ বলেন, “আমরা চালক, এত বড় জরিমানা কীভাবে দিতে পারি?”
উল্লেখ্য, পুরানো হিট অ্যান্ড রান মামলায় সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ছিল। কিন্তু সেই জায়গায় হঠাৎ করে সাজা এবং জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ায় এই প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন ট্রাকচালকরা।