সিবিএসই-র পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়ল ফৈজ আহমেদের কবিতা

দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির বইয়ে উর্দু কবি ফৈজ আহমেদ ফৈজের কবিতার অনুবাদ পড়ানো হয়ে আসছে। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যক্রম থেকে ফৈজ…

দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির বইয়ে উর্দু কবি ফৈজ আহমেদ ফৈজের কবিতার অনুবাদ পড়ানো হয়ে আসছে। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যক্রম থেকে ফৈজ আহমেদের কবিতাগুলি বাদ পড়েছে। সিবিএসই-র ‘ডেমোক্রাটিক পলিটিক্স-২’ নামে সদ্য প্রকাশিত বইয়ে দেখা যাচ্ছে ফৈজ আহমেদ ফৈজের কবিতা দুটি আর নেই। এতদিন ধর্ম নিরপেক্ষতা ও রাজনীতি সংক্রান্ত চ্যাপ্টারে ফৈজের দুটি কবিতা ছিল। পাশাপাশি দুটি ছবির সঙ্গেও উদ্ধৃত ছিল ফৈজের কবিতার লাইন। কিন্তু সেই উক্তি দুটিও পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কী কারণে ফৈজ আহমেদের কবিতা বাদ দেওয়া হল এ বিষয়ে সিবিএসই-র পক্ষ থেকে কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি।

সিবিএসই-র পাঠ্যক্রমে ফৈজ আহমেদের যে কবিতাগুলি পড়ানো হত সেগুলি তিনি লাহোর জেলে বন্দি থাকার সময় লিখেছিলেন। একদিন ফয়েজ আহমেদ দাঁতের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়েন। জেল থেকে তাতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময়ও তাঁকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল। সেসময় তিনি ওই কবিতাগুলি লেখেন।

২০০৫ সালে সিবিএসসি বোর্ডের ওই বইটি তৈরি হয়েছিল। সেসময় থেকেই ফৈজ আহমেদের কবিতাগুলি ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ বছর পর সিবিএসই-র সিলেবাস থেকে সেই কবিতাগুলি ছেঁটে ফেলা হল। কবিতার পাশাপাশি পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়েছে ‘ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডাইভার্সিটি অধ্যায়টিও। সামাজিক ভেদাভেদ ও বৈষম্য নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার জন্যই এই অধ্যায়টি পড়ানো হত। বলিভিয়া থেকে নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাস এই অধ্যায়ে ছিল। কিন্তু সেটিও বাদ দেওয়া হল। পাশাপাশি একাদশ শ্রেণির ইতিহাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘সেন্ট্রাল ইসলামিক ল্যান্ডস’ অধ্যায়টি।

অ্যাফ্রো-এশিয়ান এলাকায় কিভাবে ইসলামিক শাসকরা মাথা তুলেছিলেন এই অধ্যায়ে সে কথাই আলোচনা করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে তৎকালীন আর্থসামাজিক ব্যবস্থা ও ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল। একইসঙ্গে অংক বই থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস থেকে বাদ গিয়েছে পলিটিক্যাল সাইন্সের ‘কোল্ড ওয়ার এরা অ্যান্ড নন-অ্যালাইড মুভমেন্ট’ অধ্যায়টি। পাঠ্যক্রম থেকে কী কারণে এই বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হল তা জানানো না হলেও অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, গৈরিকীকরণের জন্যই সিবিএসই-র সিলেবাসে হাত দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।