দিল্লি বিস্ফোরণে শ্রীনগর থেকে গ্রেফতার আরও এক ডাক্তার

dr-tajamul-ahmed-malik-delhi-red-fort-blast-arrest-2025

নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বর: লাল কেল্লার কাছে সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া প্রচণ্ড বিস্ফোরণের তদন্তে পুলিশের একটি নতুন সাফল্য। শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার তাজামুল আহমেদ মালিককে কারান নগর থেকে গ্রেফতার হয়েছে। কুলগামের বাসিন্দা এই ডাক্তারকে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল টিম ধরেছে, এবং তাঁকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।

Advertisements

এই গ্রেফতারের ফলে এখন সন্দেহ হচ্ছে যে, এই ‘হোয়াইট কলার’ টেরর মডিউলে আরও গভীরভাবে জড়িত ছিলেন তাজামুল। বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আরও কয়েক ডজন মানুষ গুরুতর আহত। এই ঘটনা দেশের রাজধানীকে না কেবল চমকে দিয়েছে, বরং পুরো দেশে নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছে।বিস্ফোরণের সেই ভয়াবহ দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে।

   

দিল্লি বিস্ফোরণে বিশেষ দল গঠন NIA এর

সোমবার সন্ধ্যা ৬:৫০ মিনিটের দিকে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর ১-এর কাছে একটি সাদা হুন্ডাই আই-২০ গাড়ি রেড লাইটে থামতেই হঠাৎ প্রচণ্ড আওয়াজের সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, গাড়িটি আগুনের লেলিহান শিখায় ঢেকে যাওয়া, চারপাশে ছড়িয়ে পড়া ধোঁয়া আর ধ্বংসস্তূপ। এতে কমপক্ষে তিনটি গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়, রাস্তায় রক্তের ছিটে আর মৃতদেহের অংশ। পুলিশের ধারণা, এটি ছিল একটি ফিদায়িন-স্টাইলের হামলা, যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন ডাক্তার উমর মোহাম্মদ নবী।

Advertisements

উমর, যিনি পুলওয়ামার বাসিন্দা এবং ফরিদাবাদের আল ফালাহ ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত ছিলেন, তাঁর সহকর্মীদের গ্রেফতারের ভয়ে প্যানিক হয়ে গাড়িতে লোড করা আরডিএক্স-ভিত্তিক বিস্ফোরকটি ফাটিয়ে ফেলেন। এতে নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে তিনি ১২ জনের প্রাণ নেন।তাজামুল মালিকের গ্রেফতার এই তদন্তকে নতুন দিক দিয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, তাজামুল কুলগামের এমবিবিএস গ্র্যাজুয়েট, এবং তিনি শ্রীনগরের গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ (জিএমসি) থেকে এমডি করেছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেহ যে, তিনি একটি ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা জৈশ-ই-মোহাম্মদের মতো টেরর গ্রুপকে আর্থিক সাহায্য করত। এছাড়া, তাজামুলের নাম উঠেছে রেকি মিশনের সঙ্গে—লাল কেল্লার আশেপাশে একাধিকবার স্ক্যানিং করার অভিযোগ। তাঁর ফোন এবং ডিজিটাল রেকর্ড পরীক্ষা চলছে, যাতে টেলিগ্রাম গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগের চেইন বেরিয়ে আসে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন সেল (এসওএস) এবং দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল যৌথভাবে তাজামুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)ও আজ শ্রীনগরে যোগ দিয়েছে, যেখানে ডক্টর আদিল আহমেদ রাদার, ডক্টর মুজাম্মিল শাকিল, ইরফান মৌলভি এবং অন্যান্য চারজনের সঙ্গে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।এই মডিউলের ছবি আরও ভয়াবহ। উমরের সহকর্মী ডক্টর আদিল এবং মুজাম্মিলকে ফরিদাবাদে গ্রেফতার করার পর থেকে তদন্ত তীব্র হয়। তাদের ভাড়া বাড়ি থেকে ২,৯০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক, ২০টি টাইমার, দুই ডজন রিমোট কন্ট্রোল, একটি রাইফেল এবং অসংখ্য লাইভ রাউন্ড উদ্ধার হয়েছে।