কুৎসিত মেয়েদের বিয়ে দিতে সাহায্য করে পণপ্রথা, পড়ানো হচ্ছে সিলেবাসে

নার্সিং পড়ুয়াদের পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয় টি কে ইন্দ্রাণীর লেখা ‘সোসিওলজি ফর নার্সেস’। কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই বইয়ের একটি পাতার বিষয়বস্তু দেখলে…

Stop child marriage

নার্সিং পড়ুয়াদের পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয় টি কে ইন্দ্রাণীর লেখা ‘সোসিওলজি ফর নার্সেস’। কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই বইয়ের একটি পাতার বিষয়বস্তু দেখলে চমকে উঠতে হয়। শিবসেনা নেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি সামনে এনেছেন। ওই বইয়ে একটি অধ্যায় লেখা হয়েছে পণপ্রথার সুবিধা। সেখানে বলা হয়েছে পণপ্রথার মাধ্যমে যৌতুক হিসেবে পাওয়া আসবাবপত্র, রেফ্রিজারেটর, আলমারি, যানবাহনের মত বিভিন্ন জিনিস নতুন করে বাড়ি সাজাতে সাহায্য করে।

এখানেই শেষ নয়, পণপ্রথা সুবিধা হিসাবে বলা হয়েছে, অনেক কুৎসিত মেয়েদের বিয়েতে সাহায্য করে পণপ্রথা। পাশাপাশি ওই পাঠ্যাংশে দাবি করা হয়েছে, ভবিষ্যতে মেয়ের বিয়ে দিতে যাতে পণের পরিমাণ কম দিতে হয় সে কারণে বেশিরভাগ অভিভাবকই এখন তাঁদের কন্যাসন্তানকে শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করছেন।

যথারীতি নেটিজেনরা ইতিমধ্যেই এই পাঠ্যপুস্তকের কড়া নিন্দা করেছেন। অনেকেই বলেছেন, এই বই একটি আতঙ্ক। কেউ বলেছেন, কলেজ শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে এ ধরনের বিষয় পড়ানো হচ্ছে দেখে খুব অবাক লাগছে। বুঝতে পারছি না আমরা কোন দিকে এগোচ্ছি। যদিও লেখিকার দাবি, নার্সিং কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ী তিনি বইটি লিখেছেন। তবে সকলেই প্রশ্ন করেছেন, এ ধরনের বই পড়ে পড়ুয়ারা কি শিখবে? শিবসেনা সাংসদ এই বইটির পাতার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি তিনি দেশের শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে ট্যাগ করেছেন। সাংসদের দাবি, বইয়ের এই অংশটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। অবিলম্বে এই অংশটুকু পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া দরকার।

আমাদের দাবি, আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে বাস করছি। আমাদের এই দাবি যে কতটা সঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। আমরা নিজেদের যতই আধুনিক বলি না কেন, সমাজের একটা অংশ এখনও বিভিন্ন কুসংস্কার কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সে কারণেই অগ্রগতি হলেও আমরা আজও অনেক প্রাচীন বর্বরোচিত প্রথাকে আমাদের জীবন থেকে চিরতরে ঝেড়ে ফেলতে পারেনি। সমাজের একটা বড় অংশ আজও মেয়েদের পণ্য বলে মনে করে। তাই পণপ্রথার মত কুঅভ্যাস আজও রয়ে গিয়েছে। অনেকেই বলে থাকেন, পণপ্রথার মত অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করতে শিক্ষার প্রয়োজন। কিন্তু পাঠ্যবইয়ের এই অধ্যায় প্রশ্ন তুলে দিল, আমরা আজ কি ধরনের শিক্ষা পাচ্ছি। এ ধরনের শিক্ষা পণ প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করা তো দূরের কথা, বরং তাকে আরও উৎসাহিত করবে।