একাবিংশ শতাব্দীতেও চরম লিঙ্গ বৈষম্যের করুণ নজির হরিয়ানার রোহতকে। পুত্র সন্তানের বদলে যমজ কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ায় সদ্যজাতদের মেরে ফেলল বাবা। এমনকী ওই দু’জনকে শ্মশানে কবরও দেয়। ৩ জুন এই খুনের পর থেকেই অভিযুক্ত পলাতক ছিল। পরে তাকে হরিয়ানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ফোন কলের সূত্র ধরে খুনি বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হরিয়ানার নীরজ সোলাঙ্কির সঙ্গে দিল্লির সুলতানপুরীতে বসবাসকারী পূজার বিয়ে হয়েছিল। গত ৩০ মে হরিয়ানার রোহতকের একটি হাসপাতালে সোলাঙ্কি দম্পতির কোল আলো করে জন্ম নেয় যমজ কন্যা সন্তান। কন্যা নবজাতকদের নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট ছিলেন না নীরজ। ছেলে না হওয়ায় রীতিমত চোটপাট করে সে।
এরপরই ছেলে না হওয়ার রাগে, দুঃখে চরম পদক্ষেপ করে সে। অভিযোগ, দিন তিনেকের দুই সদ্যজাত কন্যাকে মেরে ফেলে সে, এরপর স্থানীয় একটি শ্মশানে কবর দিয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে যে, দুই নবজাতক কন্যার খুনের ঘটনা সম্পর্কে গত ৩ জুন সুলতানপুরি থানায় একটি ফোন আসে। সেখান থেকেই পুরোটা জানতে পারা য়ায়। ওই ফোন করেছিলেন অভিযুক্ত নীরজের নিকট এক আত্মীয়। তিনি ফোনে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর শ্যালক ৩ দিন বয়সী যমজ মেয়েকে হত্যা করেছে এবং একটি শ্মশানে কবর দিয়েছে। এপপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
রেলের চাকরিতে আগ্রহীদের জন্য বড় খবর, শীঘ্রই ১৫ হাজার পদে নিয়োগের ঘোষণা
এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘ওই ফোনের পরই যেখানে শিশুদের কবর দেওয়া হয়েছিল, সেই শ্মশানে পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল। কবর থেকে মৃতদেহগুলি বার করার জন্য সংশ্লিষ্ট এসডিএম-এর (সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট) কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়। ৫ জুন, মঙ্গোলপুরীর একটি মর্গে মৃতদেহগুলি বার করে রাখা হয়। ৬ জুন, ময়নাতদন্তের পর দেহ দু’টি মামার হাতে তুলে দেওয়া হয়।’
এসবের পর শুরু হয় পলাতক ‘খুনি বাবা’ নীরজ সোলাঙ্কিকে ধরার প্রক্রিয়া। ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি দলকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক নীরজ সোলাঙ্কির সন্ধানেরর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সম্পত্তির ভাড়ার অর্তে সংসার চালাতেন নীরজ। স্থানীয় স্তরে খোঁজখবর করে এখবর জানতে পারে পুলিশ। নজর রাখা হয় অভিযুক্তের মোবাইল নম্বরের কললিস্টেও। পুলিশ কল ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, নীরজ সোলাঙ্কি পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য ঘন ঘন নিজের মোবাইল হ্যান্ডসেট, সিম এবং গোপন ডেরা পরিবর্তন করেছিলেন। দিল্লি এবং হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযানের পর অবশেষে রোহতকের সাম্পলা থেকে নীরজ সোলাঙ্কিকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের দাবি, জেরায় অভিযুক্ত নীরজ খুনের কথা স্বীকার করেছে।