কাশ্মীরের গুলমার্গ, যা একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, সেখানে রমজান মাসে একটি আউটডোর ফ্যাশন শো আয়োজনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার একটি ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয় যেখানে মডেলরা শিভাম এবং নারেশের ডিজাইনে ফ্যাশন শো তে অংশ নিয়েছিলেন । তবে এই ফ্যাশন শো টি রমজান মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ায় কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতারা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষজন এটি “অশ্লীল” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গোটা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর অফিস বিবৃতি প্রদান করে জানায় যে, এ ধরনের ঘটনার প্রতি মানুষের “আশ্চর্য এবং ক্ষোভ” স্বাভাবিক। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি যা ছবি ও ভিডিও দেখেছি, তাতে স্থানীয় সংবেদনশীলতার প্রতি পুরোপুরি অবজ্ঞা প্রকাশ পেয়েছে, এবং তা রমজান মাসে ঘটানো হয়েছে।” তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, যার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফ্যাশন শোটি ছিল এল ইন্ডিয়া ফ্যাশন শো, যা শিভাম এবং নারেশ নামক ফ্যাশন ডিজাইনার জুটি দ্বারা আয়োজিত। এই ফ্যাশন শোয়ের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
হুরিয়াত নেতা মীরওয়াইজ উমর ফারুক ফ্যাশন শো নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “রমজান মাসে গুলমার্গে একটি অশ্লীল ফ্যাশন শো আয়োজন করা হয়েছে, যা ভিডিও এবং ছবি ভাইরাল হওয়ায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। কাশ্মীর, যেটি সুফি এবং ধর্মীয় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত, সেখানে এমন ঘটনা কীভাবে সহ্য করা যাবে? এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে জবাবদিহি করা উচিত। পর্যটন প্রচারের নামে এমন অশ্লীলতা কাশ্মীরে সহ্য করা হবে না।” তিনি এই কথাগুলি টুইটারে প্রকাশ করেছেন। জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের প্রধান সাজাদ লোন এই ফ্যাশন শো নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এটি এমন একটি ঘটনা যা ‘যথার্থভাবে এড়ানো যেত, যদিও আমি একজন ‘উদার’ মানুষ হিসেবে এটি বলছি। আমি বিশ্বাস করি সম্মানজনক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সহাবস্থান করা উচিত, কিন্তু এই সময়ে এমন একটি ইভেন্ট আয়োজন আদর্শ ছিল না।”
এদিকে, এই বিতর্কের পর মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর অফিস তাদের বক্তব্যে আরও যোগ করেন, “আমি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাদের কাছ থেকে একটি রিপোর্ট চেয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ রিপোর্টের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।” এটি স্পষ্ট যে, কাশ্মীরে রমজান মাসে এমন একটি ফ্যাশন শো আয়োজন স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় সংবেদনশীলতার প্রতি অপমানজনক বলে বিবেচিত হয়েছে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।