রায়পুর: ছত্তিশগড়ের নকশালবাদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের অক্লান্ত প্রচেষ্টা আরও একটি নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। আজ রবিবার উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় শর্মা ঘোষণা করেছেন যে, ২১ জন নকশালীকে সফলভাবে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে ১৩ জন মহিলা এবং ৮ জন পুরুষ।
এই গ্রুপে ৪ জন ডিভিশনাল কমিটি মেম্বার (ডিভিসি) এবং ৯ জন এরিয়া কমিটি মেম্বার (এসিএম) স্তরের নেতা, বাকি সবাই পার্টির সাধারণ সদস্য। এই আত্মসমর্পণের সাথে তারা ১৮টি অস্ত্র জমা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩টি একে-৪৭, ২টি আইএনএসএএস, ৪টি এসএলআর এবং অন্যান্য হালকা অস্ত্র।
চাল রফতানিতে বিশ্বব্যাপী আরও শক্তিশালী অবস্থানে ভারত
উপ মুখ্যমন্ত্রী বলেন এই ঘটনা শুধু একটি সংখ্যার খেলা নয়, বরং বস্তরের জঙ্গল-পাহাড়ে শান্তির একটি আলোর রশ্মি, যা হাজার হাজার মানুষের জীবনে নতুন আশার সূচনা করেছে।বিজয় শর্মা রায়পুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আজ এই ২১ জনের আত্মসমর্পণ আমাদের সরকারের পুনর্বাসন নীতির সাফল্যের প্রমাণ। তারা জঙ্গলের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে, এবং আমরা তাদের হাত ধরে মূলধারায় ফিরিয়ে এনেছি।”
এই নকশালীরা মূলত বাস্তারের মাদ এলাকা থেকে এসেছে, যেখানে নকশালবাদের ছায়া দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল। মহিলাদের সংখ্যা বেশি হওয়া একটি বিশেষ দিক তারা অনেকেই জোরপূর্বক নিয়োগিত হয়ে জঙ্গলে বেঁচে ছিলেন।
একজন পুনর্বাসিত মহিলা, যার নাম গোপন রাখা হয়েছে, বলেন, “জঙ্গলে আমরা শুধু ভয়ে বেঁচে ছিলাম। এখন স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছি। সরকারের এই সুযোগ আমাদের নতুন জীবন দিয়েছে।” এই কথাগুলো শুনে শর্মা চোখে জল নিয়ে বলেন, “এটি যুদ্ধের নয়, মানবতার জয়।”
এই আত্মসমর্পণের পটভূমি ছত্তিশগড় সরকারের নতুন সারেন্ডার অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন পলিসি, যা মার্চ মাসে চালু হয়েছে। এই নীতিতে সারেন্ডারকারীদের জন্য আর্থিক সাহায্য, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, বাসস্থান এবং চাকরির সুযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশেষ করে, যাদের মাথায় পুরস্কারের টাকা ছিল, তাদের সেই অর্থ দেওয়া হয় এবং অস্ত্রের বিনিময়ে অতিরিক্ত সাহায্য।
শর্মা বলেন, “আমরা অ্যাসাম এবং অন্যান্য রাজ্যের নীতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এটি তৈরি করেছি। এখন এটি ফল দিচ্ছে।” এই ২১ জনের মধ্যে ডিভিসি স্তরের নেতারা ছিলেন নকশালবাদের মেরুদণ্ড, যারা এখন শান্তির পথ বেছে নিয়েছেন। তারা ১৮টি অস্ত্র জমা দিয়ে বলেছেন, “আর কোনো হিংসা নয়।”
গত ২২ মাসে বিজেপি সরকারের আমলে ৪৭৭ জন নকশালী নিহত, ১,৭৮৫ জন গ্রেফতার এবং ২,১১০ জন আত্মসমর্পণ করেছে। অক্টোবর মাসেই বাস্তারে ২০৮ জনের মাস সারেন্ডার হয়েছে, যার মধ্যে ১১০ জন মহিলা ছিলেন। উত্তর বাস্তার এবং আবুঝমাদ এলাকা এখন সম্পূর্ণ নকশাল মুক্ত ঘোষিত হয়েছে।


