পটনা, ২১ সেপ্টেম্বর: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক ময়দান (Bihar Election)। সেই আগুনেই ঘৃতাহুতি দিলেন নির্বাচন কৌশলী জনসুরাজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোর। বিহারের ক্ষমতা কার হাতে যাবে তা নিয়েই যত বাকবিতন্ডা। তবে রাহুল-তেজস্বী জোট নিয়ে তিনি একেবারে অন্দরের তরজা সামনে তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেছেন, “বিহারে কংগ্রেসের কোনও শক্ত জমি নেই। যদি তাদের দুজনের (রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদব) একসঙ্গে এতটা ক্ষমতা থাকে, তাহলে তেজস্বী যাদব আলাদা করে কেন ভোট যাত্রা করছেন। একসঙ্গে নয় কেন। কংগ্রেসের সদস্যরা কেন তাতে যোগ দিচ্ছে না? পিকে স্পষ্ট বলেছেন বিহারে জোটের নেতৃত্ব আরজেডি-র হাতে; তার শক্তি এবং মুখ হল লালু যাদব এবং তেজস্বী যাদব।
তিনি আরও বলেছেন বিহারে কে রাহুল গান্ধীকে প্রশ্ন করবে। যদি কাল ভুল করে জোট যেতে তাহলে লালু যাদব কি রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খড়্গের কাছে যাবেন? সবাই জানে যে তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তিনি নিজেই প্রতিদিন মঞ্চে এটা বলছেন।” বিহার নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রশান্ত কিশোরের এই মন্তব্য যথেষ্ট চাঞ্চল্য তৈরী করেছে।
তিনি কংগ্রেসকে আরজেডি-র ‘সাইডকিক’ (সহায়ক) বলে উল্লেখ করেছেন। পূর্বে লালু প্রসাদ যাদবের প্রতি কংগ্রেসের আনুগত্য ছিল, এখন তেজস্বী যাদবের পালা। এই কথা বলতে গিয়ে তিনি রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন যে, লালু যাদবের অফিসে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের ছবি পায়ের নিচে রাখার ঘটনা নিন্দা করে প্রমাণ করুন যে কংগ্রেস স্বাধীন দল। কিশোরের মতে, বিহারে কংগ্রেসের কোনও স্বতন্ত্র পরিচয় নেই; তারা আরজেডি-র ছায়ায় লুকিয়ে আছে।
বিহারের ২৪৩ আসনের বিধানসভায় বর্তমানে এনডিএ-র (বিজেপি-জেডিইউ) ১৩১ আসনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আরজেডি-কংগ্রেস-বামপন্থী জোটের শিকেয় ছিড়েছে ১১১ আসন। কিন্তু কিশোরের দাবি, জোটের আসল শক্তি আরজেডি-র কাছে কেন্দ্রীভূত। তেজস্বী যাদবের ‘বিহার অধিকার যাত্রা’ (১৬ সেপ্টেম্বর জাহানাবাদ থেকে শুরু, ২০ সেপ্টেম্বর বৈশালিতে সমাপ্ত) এর প্রমাণ।
এই যাত্রায় কংগ্রেসের কোনও উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ নেই বলে কিশোর জোর দিয়ে বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, “রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ব্যস্ত, বিহারের যুবকদের সমস্যা তাঁর দৃষ্টিগোচরে নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সন্তান; কীভাবে বিহার বা আমার মতো একজনকে গুরুত্ব দেবেন?”
কিশোরের জন সুরাজ পার্টি বিহারে নতুন বিকল্প হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করেছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, আগামী এক বছরের মধ্যে ৫০ লক্ষ যুবকের জন্য বিহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন, যাতে প্রবাসী যুবকরা আর ১০-১২ হাজার টাকার চাকরির জন্য বাইরে যেতে না হয়। তিনি বলেছেন, “লালু যাদব নবম শ্রেণিতেও পাস করেননি, কিন্তু তাঁর ছেলে ‘রাজা’ হতে চায়, যখন লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক বেকার।
ভারত-পাক সহ ৭ যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি, নোবেল শান্তি পুরস্কার চান Trump!
এটাই বিহারের দুর্দশা।” কিশোর প্রধানমন্ত্রী মোদী, রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদবকে ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ’-এর সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন যে, তারা দুর্নীতি বা বেকারত্ব দূর করতে পারবে না। কংগ্রেস এবং আরজেডি কিশোরের মন্তব্যের জবাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে প্রশান্ত জোটের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেলেছেন। কিশোর বলেছেন, “বিহারের জনগণের কাছে জন সুরাজ নতুন বিকল্প। এনডিএ বা কগ্রেস RJD জোট নয়।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
