অমৃতসর: পঞ্জাব পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হরচরণ সিং ভুল্লারকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। তাঁর বিভিন্ন ঠিকানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মেলে৷ উদ্ধার করা হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা নগদ, দেড় কেজি সোনা, বিলাসবহুল গাড়ি, বিদেশি মদ, দামি ঘড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র৷
ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেহাতে ধরা পড়েন
রূপনগর রেঞ্জের এই ডিআইজি-কে বৃহস্পতিবার সিবিআই মোহালিতে তাঁর দফতর থেকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। অভিযোগ, তিনি এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিচ্ছিলেন একটি মামলা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে। ব্যবসায়ী আকাশ বত্তা অভিযোগ দায়ের করেন যে, ভুল্লার ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিরশনু নিয়মিত ঘুষ ও মাসিক ‘সেবা-পানি’ দাবি করতেন। অর্থ না দিলে মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো।
সিবিআই জানিয়েছে, ১১ অক্টোবরের একটি রেকর্ড করা হোয়াটসঅ্যাপ কলে ভুল্লারকে কিরশনুকে ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহের নির্দেশ দিতে শোনা যায়। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়। ব্যবসায়ীকে প্রথম কিস্তি দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল ভুল্লারের অফিসে—সেই সময়ই অভিযান চালিয়ে তাঁকে এবং কিরশনুকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রচুর সম্পত্তি উদ্ধার CBI seizes 5 crore cash from Punjab DIG
পরবর্তী তল্লাশিতে ভুল্লারের পঞ্জাব ও চণ্ডীগড়ের একাধিক ঠিকানায় মেলে বিপুল সম্পদ। উদ্ধার করা হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা নগদ, ১.৫ কেজি সোনা, ১৫টিরও বেশি সম্পত্তির নথি, মার্সিডিজ ও অডির চাবি, ২২টি উচ্চমূল্যের ঘড়ি, একাধিক লকারের চাবি, ৪০ লিটার আমদানিকৃত মদ এবং বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র—যার মধ্যে রয়েছে ডাবল ব্যারেল বন্দুক, রিভলভার, পিস্তল ও একটি এয়ারগান।
কিরশনুর কাছ থেকেও উদ্ধার হয়েছে ২১ লক্ষ টাকা নগদ। দুই অভিযুক্তকেই শুক্রবার বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হবে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অভিযানে পঞ্জাব পুলিশের কোনও সদস্যকে যুক্ত করা হয়নি, যাতে তদন্তের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
২০০৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার
২০০৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার হরচরণ সিং ভুল্লার ২০২৪ সালের নভেম্বরে রূপনগর রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে তিনি পাটিয়ালা রেঞ্জের ডিআইজি, ভিজিল্যান্স ব্যুরোর যুগ্ম পরিচালক এবং জাগরাঁও, মোহালি ও সাঙ্গরুর জেলার এসপি ছিলেন।
ভুল্লার পঞ্জাব পুলিশের অভ্যন্তরে ‘যুদ্ধ নশেয়ান বিরুদ্ধ’ (Yudh Nasheyan Virudh) মাদকবিরোধী অভিযানে সক্রিয় ভূমিকার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি পঞ্জাবের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ মেহল সিং ভুল্লারের পুত্র। এছাড়াও, তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই বিশেষ তদন্তকারী দলকে (SIT), যা আকালি নেতা বিক্রম সিং মজিঠিয়াকে মাদক পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।