নীতীশকে ব্যবহার করছে বিজেপি! দাবি কানহাইয়ার

বিহারের রাজনীতিতে উত্তেজনা তুঙ্গে। কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার সম্প্রতি একটি বিস্ফোরক দাবি করেছেন (Nitish)। তিনি বলেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আসন্ন…

Nitish

বিহারের রাজনীতিতে উত্তেজনা তুঙ্গে। কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার সম্প্রতি একটি বিস্ফোরক দাবি করেছেন (Nitish)। তিনি বলেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করছে এবং তারপর তাঁকে বাদ দিয়ে নিজেদের নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করার পরিকল্পনা করছে।

কানহাইয়া আরও অভিযোগ করেছেন যে, বিহারের জনগণ এখনও বিজেপিকে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়, তাই তারা পিছনের দরজা দিয়ে সরকার গঠনের চেষ্টা করছে। এই মন্তব্য তিনি ‘ভোট অধিকার যাত্রা’-র সময় পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে করেছেন। এই যাত্রা বিহারের ২০টিরও বেশি জেলা কভার করবে এবং ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় একটি বড় সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে।

   

কানহাইয়া কুমার বলেন, “বিজেপির একমাত্র এজেন্ডা হলো নীতীশ কুমারকে নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করা এবং তারপর তাঁকে ফেলে দিয়ে নিজেদের মুখ্যমন্ত্রী বসানো। বিহারের মানুষ বিজেপির সরাসরি নেতৃত্ব চায় না, তাই তারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়।” তিনি নির্বাচন কমিশনের উপরও তীব্র আক্রমণ করেছেন, অভিযোগ করে বলেন, “নির্বাচন কমিশন বিজেপির ভাষায় কথা বলছে।

তারা বলছে, তাদের কাছে কোনো ‘পক্ষ’ বা ‘বিপক্ষ’ নেই, কিন্তু তাদের আসলে ‘নিষ্পক্ষ’ হওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন, “ভোটের শাসন মানে সাধারণ মানুষের শাসন। কিন্তু ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে গণতন্ত্র ‘ডেমোকুর্সি’ হয়ে যায়।”

কানহাইয়া বিহারে চলমান বিশেষ তীব্র সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজের পদ্ধতি মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করেছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকায় যোগ হচ্ছে এবং জীবিত মানুষের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, “নির্বাচন কমিশন আগে বলেছিল সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু এখন তারা বলছে তালিকার ত্রুটি সংশোধন করতে হবে। এর জন্য তাদের দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”

বিহারের রাজনীতিতে নীতীশ কুমারের ভূমিকা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বারবার জোট পরিবর্তন করে ‘পল্টু রাম’ নামে পরিচিত হয়েছেন। ২০২৪ সালে তিনি মহাগঠবন্ধন ছেড়ে আবার বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধেন। এর আগে ২০২২ সালে তিনি বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে মহাগঠবন্ধন গঠন করেছিলেন।

কিন্তু বিজেপির সঙ্গে তাঁর এই নতুন জোট নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কানহাইয়া অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নীতীশকে শুধুমাত্র নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করছে এবং তাঁর জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় তাঁকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

Advertisements

বিহারে ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ জোট নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নির্বাচনে লড়ার কথা ঘোষণা করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ জয়সওয়াল বলেছেন, “নীতীশ কুমারই ২০২৫ সালে এনডিএ-র নেতৃত্ব দেবেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।”

তবে, বিজেপির কিছু নেতা, যেমন উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা, নীতীশের নেতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সিনহা বলেছেন, জোটের এই সিদ্ধান্তে বিজেপির কর্মীদের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে, মহাগঠবন্ধনের নেতা তেজস্বী যাদবও নীতীশের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নীতীশ কুমার ২০২৫ সালের পর আর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ফিরবেন না। তেজস্বী দাবি করেছেন, মহাগঠবন্ধন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আরজেডি থেকে মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

কানহাইয়ার এই মন্তব্য বিহারের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। তিনি বলেছেন, বিজেপি মহারাষ্ট্রের মতো কৌশল প্রয়োগ করছে, যেখানে তারা শিবসেনার একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল এবং পরে তাঁকে সরিয়ে নিজেদের নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে। বিহারেও বিজেপি এই ধরনের কৌশল প্রয়োগ করতে পারে বলে কানহাইয়া আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের দিকে নজর আইএসএলের দুই ক্লাবের

বিহারের রাজনীতিতে নীতীশ কুমারের ভূমিকা এবং বিজেপির কৌশল নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। কানহাইয়ার এই অভিযোগ এবং তেজস্বীর আক্রমণ বিহারের আসন্ন নির্বাচনকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন সবার নজর এই দিকে, নীতীশ কুমার এবং বিজেপির জোট কতদিন টিকবে এবং মহাগঠবন্ধন কীভাবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নেবে।