Assam NRC: স্বাধীনতা সংগ্রামীর কন্যা অবশেষে ভারতীয়! বিজেপি শাসিত অসমে হয়েছিলেন ‘বিদেশি’

অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলার ৭৩ বছর বয়সী সেজেবালা ঘোষ ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের (Assam NRC) জন্য তিন বছরের আইনি লড়াইয়ের পরে অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেজেবালা ঘোষ, একজন…

অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলার ৭৩ বছর বয়সী সেজেবালা ঘোষ ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের (Assam NRC) জন্য তিন বছরের আইনি লড়াইয়ের পরে অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেজেবালা ঘোষ, একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মেয়ে। তিনি ২০২০ সালে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল (FT) কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। এখন তার পরিবারের নথিগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার পরে একই ট্রাইব্যুনাল তাকে ভারতীয় নাগরিক ঘোষণা করেছে।

সেজেবালা ঘোষের এই কঠিন লড়াই ২০২০ সালের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল। তিনি নোটিশ পেয়েছিলেন যাতে তাকে তার নাগরিকত্ব সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিতে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়। হতবাক ও অপমানিত হয়ে তিনি এনজিও সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস (সিজেপি) থেকে আইনি সহায়তা চেয়েছিলেন। ওই এনজিও তরফে শ্রীমতি ঘোষের মামলা লড়ার জন্য অ্যাডভোকেট দেওয়ান আবদুর রহিমকে নিয়োগ করা হয়। আইনজীবী রহিম ১৩টি বৈধ নথি প্রদান করেন যা ১৯৫১ সালের আগে অসমে ঘোষের পরিবারের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে।

এই নথিগুলির মধ্যে সেজেবালা ঘোষের বাবার শরণার্থী নিবন্ধন শংসাপত্র, পাসপোর্ট, ১৯৫১ সালের এনআরসি এবং ১৯৫৮ সালের ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেজেবালা ঘোষের মায়ের নাম ১৯৬২ সালের ডোনেশন স্লিপে এবং ১৯৬৬ সালের মঙ্গলদৈয়ের ভোটার তালিকাতেও রেকর্ড করা হয়েছিল। উপরন্তু, সেজেবালা ঘোষের নিজের নাম ১৯৮৯, ১৯৯৭, ২০০৫, ২০১১ এবং ২০২০ সালের বঙ্গাইগাঁওয়ের ভোটার তালিকায় দেখা গেছে।

প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, পদ্ধতিগত বিলম্বের কারণে মামলাটি তিন বছর ধরে চলে। অবশেষে, ৪ নভেম্বর, ২০২৩-এ, ফরেনার্স ট্রা়ইবুন্যালের রায়ে প্রবীণ সেজেবালা ঘোষকে ভারতীয় নাগরিক ঘোষণা করে। এফটি প্রদত্ত নথির বৈধতা স্বীকার করেছে এবং অসমে ঘোষের পরিবারের দীর্ঘস্থায়ী বাসস্থানকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

রায়ের পর সেজেবালা ঘোষ বলেন, তিনি যে ন্যায়বিচার পেয়েছিলেন তার জন্য তিনি স্বস্তি ও কৃতজ্ঞ। তিনি যে অপমান সহ্য করেছিলেন তাতে তিনি তার ক্ষোভ এবং আঘাতও প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ভারতের স্বাধীনতার জন্য তার বাবার আত্মত্যাগকে কখনই প্রশ্ন করা উচিত নয়। “আমার বাবা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি চন্দ্রশেখর আজাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং এই দেশের স্বাধীনতার জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার সাত দশক পরে, তার মেয়েকে অবৈধ অভিবাসী বলা হয়েছিল, এটি লজ্জাজনক।” সেজেবালা কৃষ্ণের ভক্ত বঙ্গাইগাঁওয়ের শালবাগান গ্রামে তার বাড়িতে একা থাকেন।