Indian Security Force : জেনে নিন ভারতের কোন সীমানায় মোতায়েন রয়েছে কোন বাহিনী

স্বাধীনতার পর রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকতো দেশের (Indian Security Force) সীমান্ত সুরক্ষার কাজে৷ ১৯৬২ এবং ‘৬৫ সালের যুদ্ধ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক…

Indian Security Force

স্বাধীনতার পর রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকতো দেশের (Indian Security Force) সীমান্ত সুরক্ষার কাজে৷ ১৯৬২ এবং ‘৬৫ সালের যুদ্ধ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সীমানা রক্ষা পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। এরপরেই তৈরি করা হয় বিএসএফ- সহ একাধিক সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী। একেকটি বাহিনীর কাজ একেক রকম।

BSF (Border Security Force)

১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর, ১৯৬৫ সালের ১ ডিসেম্বর পাকিস্তান বরাবর সীমান্ত রক্ষার লক্ষ্যে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স নামে পরিচিত একটি সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করা হয়। প্রাথমিকভাবে ২৫ টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে পথ চলা শুরু করেছিল বিএসএফ। বর্তমানে রয়েছে আনুমানিক ১৯২ টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্তে তাদের মোতায়েন করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর বিএসএফ-কে নবগঠিত বাংলাদেশের সীমান্ত বরাবর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

বর্তমানে বিএসএফের ২.৭২ লক্ষ জওয়ান রয়েছে। ৬ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব এই বিশেষ ফোর্স। সীমান্ত পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি জঙ্গি দমনের সময় জম্মু-কাশ্মীর ও পঞ্জাবে এবং নকশাল এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষেত্রেও বিএসএফ-কে কাজে লাগানো হয়েছে।

ITBP (The Indo-Tibetan Border Protection Force)

আইটিবিপি আইন ১৯৯২ সালে সংসদে অনুমোদন পেয়েছিল । ২০০৪ সালে ভারত-চিন সীমান্তের ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার অংশের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইটিবিপি-কে। সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে ২০০৪ সালে অসম রাইফেলসের হাত থেকে দায়িত্ব দিয়েছিল আইটিবিপি।

আইটিবিপিতে এখন ৫৬ টি সার্ভিস ব্যাটালিয়ন, ৪ টি স্পেশালিস্ট ব্যাটালিয়ন, ১৭ টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৭ টি লজিস্টিক কেন্দ্র রয়েছে বলে জানা যায়। মোট জওয়ানের সংখ্যা প্রায় ৯০, ০০০। চিন লাগোয়া সীমান্ত সুরক্ষার জন্য আউট পোস্ট তৈরি কাজও দেওয়া রয়েছে তাদের। ভারত চিন সীমান্তে মোট ১৭৩ টি বিওপি (বর্ডার আউট পোস্ট) প্রতিষ্ঠা করেছে আইটিবিপি।

SSB (Sashastra Seema Bal)

১৯৬২ সালে চীনা আগ্রাসনের পরে সশস্ত্র সীমা বল ১৯৬৩ সালের মে মাসে একটি বিশেষ পরিষেবা ব্যুরো হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০১ সালের জুন মাসে, এসএসবিকে ভারত-নেপালের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল এবং ভারত-নেপাল সীমান্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে ভারত-ভুটান সীমান্তেও এসএসবি-কে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সশস্ত্র সীমা বলের দায়িত্বে থাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য ছিল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর বিদেশী গোয়েন্দা বিভাগকে সশস্ত্র সহায়তা প্রদান করা। যা শেষ পর্যন্ত রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং-এ পরিণত হয়। ২০০১ সালে এসএসবিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ২০০১ সালে, এসএসবিকে ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ ইন্দো-নেপাল সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যা উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের মধ্যে রয়েছে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে, এসএসবিকে ভারত-ভুটান সীমান্তের ৬৯৯ কিলোমিটার অংশ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

Assam Rifles

ভারতের প্রাচীনতম নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে একটি। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়েও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। চিন তিব্বত দখল করার পর, আসাম রাইফেলসকে আসাম হিমালয় অঞ্চলের তিব্বতি সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা উত্তর-পূর্বের সংঘাতে অংশ নিচ্ছিল। এই বাহিনী ২০০২ সাল থেকে ভারত-মায়ানমার সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এআর প্রয়োজন অনুযায়ী উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় জঙ্গি দমন অভিযান পরিচালনা করে। তারাই একমাত্র সীমান্তরক্ষী বাহিনী যারা কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী নয়, বরং তারা সেনাবাহিনীর  আধাসামরিক বাহিনী। সীমান্তরক্ষীদের মতো নয়, এআর-এর প্রাথমিক কাজ সীমান্ত রক্ষা করা নয়।