SSC Scam: দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ দাবিতে ব্রেন টিউমার নিয়েও আন্দোলনে অনুপ

শিক্ষক নিয়োগে বিরাট দুর্নীতি প্রকাশ হচ্ছে। সিবিআই জেরা চলছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব আর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে দফায় দফায় জেরা করে দুর্নীতির…

শিক্ষক নিয়োগে বিরাট দুর্নীতি প্রকাশ হচ্ছে। সিবিআই জেরা চলছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব আর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে দফায় দফায় জেরা করে দুর্নীতির উৎস সন্ধানে সিবিআই। অভিযোগ,রাজ্যে বাম জমানায় যতটা নিরপেক্ষ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল তার কণামাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের তিন দফার সরকারে হয়নি।

দুর্নীতিমুক্ত চাকরির দাবিিতে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে লাগাতার আন্দোলন জারি রেখেছেন হবু শিক্ষকরা। আন্দোলনরত এক চাকরি প্রার্থী অনুপ কুমার ঘোষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। অসুস্থ হয়েও তিনি আন্দোলন জারি রেখেছেন।

অনুপের সপ্তম এবং অষ্টম ক্রনিয়াল নার্ভের ভিতর ব্রেন টিউমার ধরা পড়েছে। অপারেশন হওয়ার পরেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। নায্য চাকরির দাবিতে আন্দোলনে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

অনুপের অভিযোগ, যারা চাকরি করছেন তাদের অনেকেই পরীক্ষায় পাশ করেননি। অনেকেই চাকরি পাওয়ার অযোগ্য। তাদের কীভাবে নিয়োগ হয়েছে, সেটা আমরা জানি। আমি প্রথম থেকেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। মাঝে আমি আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াই। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারিনি। এখন আমার অপারেশন হয়েছে। আমার এই রোগ সারবে না। আবার হয়তো তিন থেকে চার বছর পর দেখা দেবে। আমি চাই দ্রুত নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সবকিছু সামনে আসুক।

একইভাবে হবু শিক্ষকদের আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস। আদালতের তরফে সরকারি চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করেননি সোমা। তাঁর বক্তব্য ছিল তিনি একার জন্য কিছু চান না। এদিকে সোমবার স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এই নির্দেশ স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব৷ সাত দিনের মধ্যে সোমার নিয়োগ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগে লাগাতার আন্দোলন জারি রেখেছেন হবু শিক্ষকরা। তিন দফায় মোট ৪৩৬ দিনের মাথায় পড়ল আন্দোলন। ২০১৯ সালে প্রেসক্লাবের সামনে ২৯ দিনের অনশন, ২০২১সালের জানুয়ারি থেকে সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে ১৮৭ দিনের অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন। এরপর গত বছরের ৮ ই অক্টোবর থেকে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্ণা দিচ্ছেন হবু শিক্ষকরা।

তাঁদের অভিযোগ, হবু শিক্ষকদের বক্তব্য,প্রথম দফায় ডাক পেলেও স্কুল সার্ভিস কমিশন নম্বর ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করেনি৷ ১:১.৪ অনুপাতে নিয়োগের গেজেটকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। মেধাতালিকায় সামনের দিকে নাম থাকলেও নিয়োগ পাননি বহু প্রার্থী। বরং তালিকায় নাম জুড়েছে মেধা তালিকায় পিছনে থাকা প্রার্থীদের৷ অভিযোগ, অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রেস ক্লাবের সামনে ২৯ দিন ধরে অনশন কর্মসুচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন হবু শিক্ষকরা। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ এর নির্বাচনের পরেই নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এবারেও মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ঈদের দিন নিয়োগ নিয়ে আশ্বাস মিললেও এখনই আন্দোলনস্থল ছাড়তে নারাজ তাঁরা।

মেধাতালিকাভুক্ত প্রার্থী লুবানা পারভিন আশা রাখেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্তদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়ণ করে দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্তদের প্রতি সুবিচার করবেন। একইসঙ্গে যারা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ন্যায্য চাকরির দাবিতে অনশন করছে তাদের প্রতি দ্রুত ন্যায় বিচার করবেন।