বিহার: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক লড়াই তীব্রতর হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মগধ ও শাহাবাদ অঞ্চলে বিজেপি কর্মীসভা ও জনসভায় উপস্থিত হয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) সাফ জানিয়ে দিলেন—এনডিএ এবার ৮০ শতাংশেরও বেশি আসন জিতবে এবং বিহারে আবারও মোদী-নেতৃত্বাধীন সরকার গড়বে।
শাহ বলেন, “বিহারের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের একমাত্র পথ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতেই রয়েছে। যত শক্তিশালী হবে এনডিএ, তত দ্রুত বিহারের উন্নয়ন ঘটবে।” তিনি বিশেষভাবে মগধ ও শাহাবাদ অঞ্চলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন যে গতবার এখানে সাফল্য সীমিত ছিল, কিন্তু এবারে ঘরে ঘরে প্রচার চালিয়ে বিজেপিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
তাঁর বক্তৃতায় শুধু উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নয়, বিরোধীদের কড়া সমালোচনাও ছিল। রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদবকে নিশানা করে শাহ বলেন, “রাহুল এখন ঘুসপেঠিয়া বাঁচাও যাত্রা করছেন। প্রশ্ন হলো—ঘুসপেঠিয়াদের কি ভোটাধিকার বা চাকরির অধিকার দেওয়া উচিত?” তিনি দাবি করেন, কংগ্রেস-আরজেডি জোট ক্ষমতায় এলে বিহারের প্রতিটি অঞ্চলে ঘুসপেঠিয়াদের দখল বেড়ে যাবে।
অমিত শাহর বক্তব্যে বিজেপির জাতীয়তাবাদী এজেন্ডার স্পষ্ট ছাপ ছিল। তিনি মানুষকে মনে করিয়ে দেন, “কেউ কি ভেবেছিল অযোধ্যায় রাম মন্দির হবে? মোদীজি সেই স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন।” একইসঙ্গে তিনি কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ প্রত্যাহার এবং তিন তালাক নিষিদ্ধকরণের মতো ঐতিহাসিক পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
বিজেপি শিবির মনে করছে, শাহর এই বার্তা কর্মীদের একদিকে যেমন উজ্জীবিত করবে, অন্যদিকে বিরোধীদের উপর চাপও বাড়াবে। বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস জোট ভোটের জন্য ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমেছে। শাহর মতে, সেই প্রচারে ঘুসপেঠিয়াদের প্রশ্নকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর সেটিই বিজেপির কাছে বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার।
তিনি আরও বলেন, “এনডিএ সরকারই বিহারকে নিরাপত্তা ও উন্নয়নের নিশ্চয়তা দিতে পারে। তাই কর্মীদের দায়িত্ব, প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে এই সত্য পৌঁছে দেওয়া।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শাহর এই বক্তব্য শুধু বিজেপির ভেতরের কর্মীদের উৎসাহ দেওয়া নয়, বরং ভোটারদের মনেও জাতীয়তাবাদ ও উন্নয়নের বার্তা একসঙ্গে পৌঁছে দেওয়ার কৌশল। বিশেষ করে, মগধ ও শাহাবাদ অঞ্চলকে লক্ষ্য করে তিনি বিজেপির সাংগঠনিক ঘাটতি পূরণের ইঙ্গিত দিলেন।
এই সভা থেকে শাহর স্পষ্ট বার্তা—বিহারের ২০২৫ নির্বাচন হবে কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং জাতীয়তাবাদ, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রশ্নে একটি বড় রায়। আর এনডিএকে সেই রায়ে বিপুল জয় এনে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি।