BJP সরকারের আমলে সীমান্ত নিরাপদ নয়: মানিক সরকার

একদিকে ত্রিপুরা (Tripura) অন্যপাশে মিজোরাম আর বাংলাদেশের  পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট। জঙ্গল পাহাড়ি দুর্গম এলাকা দিয়ে প্রতিবেশি দেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ হচ্ছে বারবার। শুক্রবার সেইভাবেই…

একদিকে ত্রিপুরা (Tripura) অন্যপাশে মিজোরাম আর বাংলাদেশের  পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট। জঙ্গল পাহাড়ি দুর্গম এলাকা দিয়ে প্রতিবেশি দেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ হচ্ছে বারবার। শুক্রবার সেইভাবেই উত্তর ত্রিপুরা জেলার আনন্দবাজার থানার অন্তর্গত দামছড়ার খানত্লাঙে ঢুকেছিল ন্যাশনাল ফ্রন্ট অফ তুইপ্রা (NLFT) জঙ্গিরা। রাজ্যে গত বাম জমানায় শীতঘুমে যাওয়া NLFT জঙ্গিদের ফের হামলায়  এক বিএসএফ জওয়ান শহিদ হয়েছেন। এ রাজ্যে  বিজেপি (BJP) সরকার চলছে। ঘটনার জেরে ভারত সীমান্তে বিশেষ সতর্ক বিএসএফ। 

বিশেষ সূত্রে kolkata24x7 জানতে পেরেছে, হামলাকারী NLFT জঙ্গিরা বাংলাদেশের দিকেই চলে গিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি তাঁর দেশের জমিতে জঙ্গি কার্যকলাপে জিরো টলারেন্স নীতি বজায় আছে বলে জানান। তার পরেও বাংলাদেশের জমিতেই এনএলএফটি জঙ্গিরা সক্রিয় তার প্রমাণ শুক্রবারের হামলা। এই ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

কেন NLFT জঙ্গিরা গলায় ক্রুশ রাখে? পড়ুন জঙ্গি সংগঠনটির ভিতরের কথা:

শান্তি প্রতীক যীশু, ত্রিপুরায় BSF জওয়ান খুন করা NLFT জঙ্গিদের গলায় ক্রুশ লকেট থাকে

উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই বাংলাভাষী প্রধান রাজ্যে গত বাম জমানায় শীত ঘুমে চলে যাওয়া উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ তুইপ্রা (NLFT) হামলার জেরে সরগরম রাজনৈতিক মহল। রাজ্যে বিজেপি জোট সরকারের আমলে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জঙ্গি হামলা হলো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের শাসক দল বিজেপির আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নীতি নিয়ে। একই মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী বদল করেও বিজেপি বিতর্কে। বিরোধী দল সিপিআইএমের অভিযোগ, রাজনৈতিক সন্ত্রাস ছড়িয়েছে বিজেপি। সেই সন্ত্রাস জঙ্গি ততপরতা বাড়াচ্ছে।

শুক্রবার নিহত জওয়ান গিরিশ কুমার যাদবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ত্রিপুরা সরকারের উদাসীন ভূমিকার কারণেই একের পর এক নিরাপত্তাকর্মী নিহত হচ্ছেন। এই জীবনহানির দায় ত্রিপুরা সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না। তাঁর অভিযোগ, সংকীর্ন দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে সন্ত্রাসবাদীদের ব্যবহার চলছে।

বিএসএফ সূত্রে খবর, হামলাকারী এনএলএফটি জঙ্গিরা সংগঠনটির মূল ধারা অর্থাৎ বিশ্বমোহন দেববর্মার গোষ্ঠীর। বিশ্বমোহন সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। মূলত খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী উপজাতি আবেগ নির্ভর এনএলএফটি দশকের পর দশক ধরে ভারত সীনান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের জমিতে তাদের শিবির চালিয়ে আসছে।

উল্লেখ্য স্বাধীন স্বশাসিত ত্রিপুরার দাবিতে দশকের পর দশক ধরে রক্তাক্ত পথ নিয়েছে উপজাতি ভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন এনএলএফটি। তারা ত্রিপুরার ভারত অন্তর্ভুক্তির চুক্তি মানতে নারাজ। স্বাধীনতার পর রাজন্য ত্রিপুরা ভারতে অম্তর্ভুক্ত হয়েছিল। শুক্রবার ত্রিপুরার প্রয়াত মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের জন্মদিনেই হয় হামলা।

NLFT militant

ত্রিপুরায় টানা পঁচিশ বছরের বামফ্রন্ট শাসনে এই জঙ্গি সংগঠনটির বিষদাঁত ভেঙেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। গত ২০১৮ সালে বাম জমানার পর বিজেপি জোট সরকারের আমলে ক্রমে মাথাচাড়া দিচ্ছে এনএলএফটি।

গত বছর দীর্ঘ কয়েক দশক পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের উপর আচমকা হামলা করেছিল জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটি। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ি জেলার লাগোয়া ত্রিপুরান ধলাই জেলার সীমান্তে এনএলএফটি জঙ্গিদের সঙ্গে টহলদারি করা বিএসএফ জওয়ানদের গুলি বিনিময় হয়। জঙ্গিদের গুলিতে দুই জওয়ানের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই।

এর পর থেকে বারবার জঙ্গি সংগঠনটির সদস্যরা ধরা পড়েছে। তিন দিকে বাংলাদেশ ও একদিকে মিজোরাম, অসম ঘেরা ত্রিপুরায় আগামী বিধানসভা ভোটের আগে ফের জঙ্গি ততপরতা বাড়ছে।