‘পাকিস্তানকে সমর্থন করা মানে জঙ্গি সংগঠন গুলিকে মদত দেওয়া’, বিবৃতি অভিষেকের

তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সাংসদ এবং সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek) দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে একটি বৈঠকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ভূমিকাকে তীব্র সমালোচনা করেছেন।…

abhishek speech in tokyo

তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সাংসদ এবং সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek) দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে একটি বৈঠকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ভূমিকাকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বকে জানাতে চাই যে পাকিস্তানকে যে কোনও সমর্থন মানে জঙ্গি সংগঠনকে সমর্থন করা।

অভিষেকের বক্তব্য (abhishek)

২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এখন আর শুধু ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় নয়, এটি এখন বিশ্বব্যাপী একটি জরুরি প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। আমরা (abhishek)বারবার বলে আসছি যে পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনীতির গতিপথের দিকে তাকালে দেখা যায়, এটি স্বর্গ ও নরকের মধ্যে পার্থক্য। পহেলগাঁওয়ের হামলা এটাই প্রমাণ করে যে তারা চায় না ভারতের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হোক।”

   

জনতা দল (ইউনাইটেড) সাংসদ সঞ্জয় কুমার ঝা-র নেতৃত্বে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় সংকল্পের উপর জোর দিয়েছেন। এই দলটি জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে আলোচনা করছে।

পহেলগাঁও হামলা ও অপারেশন সিঁদুর

২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে একটি ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। এই হামলার জন্য টিআরএফ (দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট) নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন দায় স্বীকার করে, যা লস্কর-ই-তৈবার একটি প্রক্সি সংগঠন হিসেবে পরিচিত।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,(abhishek) “পহেলগাঁও হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিআরএফ দায় স্বীকার করেছে। এটি লস্কর-ই-তৈবার প্রক্সি, এবং রাষ্ট্রসংঘে সবাই জানে পাকিস্তান কীভাবে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার বিষয়টি আড়াল করেছে।” এই হামলার জবাবে ভারত ৭ মে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওজেকে) জঙ্গি শিবির গুলি লক্ষ্য করে আঘাত হানা হয়।

অভিষেক (abhishek) জানান, “আমরা পাকিস্তানকে ১৪ দিন সময় দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম তারা হয়তো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনবে। কিন্তু ১৪ দিন পর ভারত নয়টি জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংস করেছে, একজন বেসামরিক নাগরিকেরও ক্ষতি না করে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সমস্ত আক্রমণ ও পদক্ষেপ দায়িত্বশীল, নির্ভুল এবং অ-উস্কানিমূলক ছিল।”

‘রাফালের জনক’ বলে এই যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে চাইলেও কেন ভারত পুতিনের প্রস্তাব গ্রহণ করছে না?

Advertisements

সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের ভূমিকা

ভারত সরকার সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল গঠন করেছে, যার প্রতিটি একজন সাংসদের নেতৃত্বে ৩৩টি দেশে ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি তুলে ধরছে। সঞ্জয় কুমার ঝা-র নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (abhishek) দলটিতে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গী, ব্রিজ লাল, প্রদান বরুয়া, হেমাঙ্গ জোশী, সিপিআই(এম)-এর জন ব্রিটাস, কংগ্রেসের সলমন খুরশিদ এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মোহন কুমার।

এই প্রতিনিধি দল ২৩ মে জাপানে তাদের প্রথম সফর শুরু করে। সিউলে তারা ভারতীয় দূতাবাসে ভারতের রাষ্ট্রদূত অমিত কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং কোরিয়া-ইন্ডিয়া পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারপারসন ইউন হো-জুং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন।

আন্তর্জাতিক সমর্থন ও পাকিস্তানের ভূমিকা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek)বলেন, “পাকিস্তান সবসময় নিজেকে ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরে। কিন্তু আমরা প্রমাণ নিয়ে এসেছি যে তারা সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। আজ এটি ভারতের সমস্যা, কাল এটি অন্য কোনও দেশের হবে।” তিনি ভারতীয় প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা ভারতের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমি চাই আপনারা এই বার্তা ছড়িয়ে দিন যে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে।”

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পহেলগাঁও হামলার যৌথ তদন্তের প্রস্তাবকে ভারত “অযৌক্তিক” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা লস্কর-ই-তৈবা এবং জৈশ-ই-মোহাম্মদের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলির জড়িত থাকার প্রমাণ উপস্থাপন করছে।

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের আক্রমণের জবাবে কার্যকরভাবে তাদের বিমানঘাঁটি ধ্বংস করে। পাকিস্তানের ডিজিএমও-র ভারতীয় সমকক্ষের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের পর দুই দেশ সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (abhishek) নেতৃত্বে ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরছে। তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে এসেছি, কিন্তু জাতির কথা আসলে আমরা সবাই এক।” এই প্রচারণা ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী নীতি এবং পাকিস্তানের ভূমিকা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।