বাঘ মৃত্যুর নিরিখে গত এক দশকের রেকর্ড ভাঙল ২০২১

মহারাষ্ট্রে বাঘ মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমত উদ্বেগের পারদ চড়ছে। তথ্য বলছে, ২০২১ এ আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের বন দফতর…

garchumuk

মহারাষ্ট্রে বাঘ মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমত উদ্বেগের পারদ চড়ছে। তথ্য বলছে, ২০২১ এ আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের বন দফতর এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

বন বিভাগ ২০২১-এ ৩২ টি বাঘ মৃত অবস্থায় পেয়েছে। শিকারের পাশাপাশি আঞ্চলিক লড়াইয়ের ফলে বাঘের মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে বলে অনুমান। গত ৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের উপস্থিতিতে একটি পর্যালোচনা বৈঠকে বসে বন দফতর। সেখানে জানানো হয়, ২০২১-এ ১৮ টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে প্রাকৃতিক কারণে। ফাঁদ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং বিষক্রিয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে ৯ টি বাঘের। পাশাপাশি আরও জানানো হয়, ২০১৬-২০২০ পর্যন্ত বার্ষিক বাঘ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬ থেকে ২২-এর মধ্যে।

   

২০১৮ সালের গণনা অনুসারে, মহারাষ্ট্রে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩১২। তবে বর্তমানে এই সংখ্যাটা বাড়বে বলেই মনে করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা কারণ গত কয়েক মাসে মহারাষ্ট্রে ১৬৫ টিরও বেশি শাবকের দেখা মিলেছে। এর মধ্যে ২০০ টি বাঘ রয়েছে চন্দ্রপুর জেলায়। নাগপুরেও অনেক বাঘের দেখা পাওয়া যায়।

গত বছর এত বেশি সংখ্যায় বাঘের মৃত্যু হওয়ায় বন কর্তৃপক্ষ এখন বাঘগুলিকে সংরক্ষণের পরিকল্পনা করছে। তাদের মতে, বাঘেদের মধ্যেই পারস্পরিক আক্রমণ এবং চোরাশিকারকেও বাঘ মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এছাড়া, জনবসতি বেড়ে যাওয়ার ফলে বাঘ অভয়ারণ্য থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। এর ফলে বাঘ যেকোনও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং অনেক সময় তাদের মৃত্যু হয়।

বন বিভাগের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, চোরাচালান বা শিকার বন্ধ করতে সফল হলেও স্থানীয় ক্ষেত্রে শিকার এখনও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। ২০০৬ সালে বাঘের সংখ্যা অত্যধিক কমে গেলে উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে শিকারি দল গুলিকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেওয়া হয়। ফলস্বরূপ গত ১৫ বছরে বাঘের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। ২০০৬ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৩, ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১২।

বাঘের মৃত্যু হার কমাতে বন দফতরকে প্রয়োজনীয় এবং দীর্ঘ মেয়াদী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি প্রয়োজনে আইন সংশোধন করার কথাও বলেন। কোনও বসতি বা রেলপথ নির্মাণ করতে গিয়ে বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সেদিকেও নজর দিতে বলেন।

পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে আধিকারিকদের বাঘেদের জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক বাসস্থান গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। মহারাষ্ট্রে ৭১ টি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে যার মধ্যে ৬ টি বাঘ সংরক্ষাণাগার।