ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে (এলওসি) বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের শাসিত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকায় চারটি লঞ্চ প্যাডে প্রায় ১২০ জন প্রশিক্ষিত জঙ্গি (120 Terrorists) অনুপ্রবেশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এই জঙ্গিরা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই খবরটি সামনে আসার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এলওসি এবং গোটা জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাসের কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে, কারণ তুষারপাত এলওসি সীমান্ত পারাপার আরও কঠিন করে দিতে পারে।
গোয়েন্দা রিপোর্ট
সূত্র অনুযায়ী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সতর্কতা জারি করেছে যে নীলম উপত্যকায় চারটি লঞ্চ প্যাডে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং জঙ্গি সংগঠনগুলির প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা বসে রয়েছে। এই জঙ্গিদের মধ্যে লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল মুজাহিদীন এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ-এর সদস্যরা রয়েছে। এসব জঙ্গি ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করতে পারে। জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লা, কুপওয়ারা এবং বান্দিপোরা জেলা, পাশাপাশি রাজৌরি এবং পুনচ অঞ্চলে তুষারপাতের কারণে গত বছরের তুলনায় সামরিক অভিযান আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রস্তুতি
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী এলওসি বরাবর সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী একযোগে এলাকার ওপর নজরদারি রাখছে। পুলিশ প্রধানরা আশ্বাস দিয়েছেন যে জঙ্গি অনুপ্রবেশের যে কোনো চেষ্টা প্রতিহত করার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত বাহিনী এবং সামরিক কৌশল রয়েছে।
তবে, ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কাশ্মীরের বারামুল্লা এবং ত্রাল অঞ্চলে জঙ্গি এবং তাদের সহায়কদের আটক করা হয়েছে। জঙ্গি গোপন আস্তানা আবিষ্কার করা হয়েছে শোপিয়ান অঞ্চলে, যেখানে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়াও, কাশ্মীরের পুলিশ বিভাগ শহর এবং গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। বিশেষ টহল এবং চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোন জঙ্গি জঙ্গি ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করতে না পারে।
বৃহস্পতিবার জম্মু এবং কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এক উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠক আয়োজন করেন। বৈঠকে জম্মু এবং কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি নির্দেশ দেন যে, জঙ্গি কার্যক্রম দমন করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং পুরো জঙ্গি পরিবেশ ভেঙে দেওয়া হোক।
যতই তুষারপাত আসুক, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এবং সুরক্ষা বাহিনীর সক্রিয় পদক্ষেপের কারণে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা সফল হতে দেবে না। সুতরাং, এই মুহূর্তে জম্মু এবং কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে, যাতে জঙ্গি হুমকি এড়ানো যায় এবং জনগণের নিরাপত্তা বজায় থাকে।