প্রজাপতি ছবি সুপার ডুপার হিট। সারা জাগিয়েছে হাওয়ার মতো বাংলাদেশের ছবিও। তবে এসব কোনওটিই পছন্দ হয়নি তসলিমা নাসরিনের। তাঁর মণিকোঠায় এখনও ইরান এবং তাদের বিখ্যাত চিত্র পরিচালকদের তৈরি সিনেমা। এমনিতেই তাঁদের লড়াই , তাদের সিনেমার ভাষা আকৃষ্ট করেছে সব সময়েই সিনেমাবোদ্ধাদের।
তবে সব সময় যে দর্শক ওই ধরণের ছবিই পছন্দ করবে তা নয়। সবদিকটা সবাইকে দেখতে হয়। থাকে টার্গেট অডিয়েন্স। ছবি ভালো হলে দর্শক হল ভরাবেনই। যদিও ব্যতিক্রম বা উল্টো ফল হয়েছে এমন লাখ লাখ উদাহরণ রয়েছে। সে সব অবশ্য তসলিমা ভাবেননি। বরাবরের সোজাসুজি কথা বলতে ভালোবাসেন তিনি। এবারও বলেছেন। ছবি ভালো লাগলেও মনে ধরেনি। বলছেন ১০০ বছর লেগে যাবে বাংলা সিনেমার দুরন্ত ভালো কিছু কন্টেন্ট করতে গেলে।
শহরের সিনেমায় বাংলা ছবি এলে আমি মিস করি না। সেদিন প্রজাপতি দেখলাম। সাধারণ সামাজিক ছবি। পপকর্ন খাওয়ার সময়টুকুতেই ওড়াওড়ি করেছে প্রজাপতি। পপকর্নও ফুরোলো, প্রজাপতিও উড়ে গেল। আজ আবার ২৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হাওয়া দেখতে গেলাম। মাছ ধরার নৌকো, মাছ ধরা, মাঝিদের খিস্তি, মলিন কাপড় চোপড়, নৌকোর নোনা জীবন –খুঁটিনাটি অনেককিছুই বাস্তব থেকে পাওয়া। শুধু গল্পটাই হাওয়া থেকে পাওয়া। গল্প শুয়ে বসে থাকে। আচমকা এঁকেবেঁকে একটি সাপ ছোটবেলায় দেখা ‘নাগিনীর প্রেম’কে সামনে নিয়ে আসে। সমুদ্রে একা ভাসতে থাকা নৌকোর লংশট দেখে ‘লাইফ অফ পাই’এর লংশটগুলো বারবারই মনে পড়েছে। ক্যামেরা আর মেকআপ ভালো, সে কারণেই কি লোকেরা হাওয়া হাওয়া করছে! রেহানা মরিয়ম নূর নামের একটি যেন-তেন ছবি নিয়েও আদিখ্যেতা কম করেনি। সবাইকে ফেলিনি, বার্গ্ম্যান, টারকোভস্কি হতে বলছি না, মৌলবাদী অধ্যুষিত দেশ বেচারা ইরানের দিকেও তো তাকাতে পারেন বাঙালি পরিচালকেরা। আসগার ফারহাদি, আব্বাস কিওরস্তামি, মাজিদ মাজিদি, জাফর পানাহির মতো ছবির পরিচালক গড়ে তুলতেও বাংলার মনে হয় আরও একশ’ বছর লাগবে।