বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রার (Shilpa Shetty Raj Kundra) জন্য নতুন সমস্যার দরজা খুলে গেল। বুধবার বোম্বে হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, তাঁরা যদি বিদেশ সফরে যেতে চান, তবে আগে আদালতের কাছে ₹৬০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। আদালতের এই নির্দেশ আসে, যখন দম্পতি নিজেদের বিরুদ্ধে জারি হওয়া ‘লুক আউট সার্কুলার’ (LOC) বাতিলের জন্য আবেদন করেছিলেন।
২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একটি বড় আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে শিল্পা ও রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে। মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী দীপক কোঠারী, যিনি লোটাস ক্যাপিটাল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর পরিচালক, অভিযোগ করেছেন যে তিনি তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ব্যবসায় ব্যবহার না করে তাঁরা ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য ব্যবহার করেছেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে মুম্বই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা (EOW) তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়েছে, মোট প্রায় ৬০ কোটি টাকা তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছে। এর জেরেই তদন্ত চলাকালীন তাঁদের দেশত্যাগ রুখতে লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয়।
বিচারপতি জিতেন্দ্র জৈন ও বিচারপতি নন্দার বেঞ্চে মামলার শুনানিতে আদালত বলেন, “আপনারা বিদেশ যেতে চাইলে প্রথমে অভিযোগে উল্লিখিত ৬০ কোটি টাকা জমা দিন। তারপর আদালত আপনার বিদেশ সফরের আবেদন বিবেচনা করবে।”
আদালতের মতে, অভিযোগের অঙ্ক যেহেতু ৬০ কোটি, তাই সেই টাকাটিই প্রাথমিক সুরক্ষা হিসেবে জমা দিতে হবে। এর ফলে অভিযোগকারী ক্ষতিপূরণের দাবিতে পিছিয়ে পড়বেন না এবং তদন্ত চলাকালীন আর্থিক স্বার্থও রক্ষা পাবে।
শিল্পা ও রাজ কুন্দ্রার আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেখান যে, তাঁদের ক্লায়েন্ট সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁরা বলেন, “আমাদের ক্লায়েন্ট বিদেশ সফরে পরিবারের সঙ্গে যেতে চান, এতে তদন্তের কোনও প্রভাব পড়বে না।” তবে আদালত তাঁদের যুক্তি গ্রহণ না করে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে।
এই রায়ের পর বলিউডে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এই পদক্ষেপে বোঝা যাচ্ছে যে আইন সকলের জন্য সমান। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত এত বড় অঙ্কের টাকা জমার শর্ত অন্যায়।
বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে শিল্পা ও রাজের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়, তাঁরা সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারেন।
সব মিলিয়ে আদালতের এই নির্দেশে শিল্পা ও রাজ কুন্দ্রার বিদেশ সফরের পরিকল্পনায় আপাতত জল পড়েছে। এখন তাঁদের সামনে একটাই রাস্তা ৬০ কোটি টাকা জমা দেওয়া অথবা আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়া।