বিরোধী দলের ‘মৃত’ নেতাকে পচা কুকুরের সঙ্গে তুলনা মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ২ হাজারেরও কম ভোটে হেরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata…

Mamata Banerjee

নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ২ হাজারেরও কম ভোটে হেরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে হলে, নিয়ম মতো ছ’মাসের মধ্যে কোনও একটি কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে তাঁকে। 

আরও পড়ুন শিক্ষক দিবস হোক বিদ্যাসাগর স্মরণে, চিঠি মমতার ঘরে

ফলে জিততে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ভোটপ্রচার দেখে ইতিমধ্যেই বোঝা গিয়েছে, প্রেস্টিজ ফাইটে কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে মরিয়া তিনি। ভবানীপুরের গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। কলকাতা হাই কোর্টের অ্যাডভোকেট প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। ২০১৪ সালে মোদী ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। ক্ষমতায় এসেছিল এনডিএ সরকার (NDA)। সেবছরেরই আগস্টে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। শুরুতেই দলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করেছেন। ছ’বছর পর, ২০২০ সালের আগস্টে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (বিজেওয়াইএম) সহ-সভাপতি করা হয়।

এতকিছুরই পরেও প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল শুভেন্দু অধিকারী নন। সেরকমভাবেই সিপিআইএমের শ্রীজীব বিশ্বাসও মীনাক্ষী গোস্বামী নন। ফলে আপাতদৃষ্টিতে লড়াই যথেষ্টই সহজ তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে। কিন্তু সেই লড়াইয়ের কোমর বেঁধে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তত তাঁর ভোটপ্রচার দেখে তাই মনে হচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সেই প্রচারে গিয়েই এবার আলটপকা মন্তব্য করে বসলেন তিনি। মৃত বিজেপি নেতাকে তুলনা করলেন পঁচা কুকুরের সঙ্গে। যা তাঁর ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রী’ ইমেজের সঙ্গে যায় না বলেই মনে করছেন প্রত্যেকে।

একদিন আগেই মমতার বাড়ির সামনে মৃত বিজেপি কর্মী মানস সাহার দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। বিক্ষোভে ছিলেন স্বয়ং সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সদ্য নিযুক্ত রাজ্য সভাপতি। সেখানে পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বাধে তাদের। সেখানেই ঘটনা প্রসঙ্গেই মমতার মন্তব্য, ‘আমার বাড়ির সামনে ডেড বডি নিয়ে চলে যাচ্ছ। তোমার বাড়ির সামনে যদি আমি পাঠিয়ে দিই একটা কুকুরের ডেড বডি, ভাল হবে? এক সেকেন্ড লাগবে পচা কুকুর তোমার বাড়ির সামনে ফেলে আসব।’

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী ধূর্জটি সাহা। এলাকায় মানস নামেই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ভোট গণনার দিন গণনা কেন্দ্রের বাইরে তাঁকে বেধরক মারধর করা হয়েছিল। তৃণমূল বিধায়ক গিয়াউদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বেই ধূর্জটি সাহাকে (মানস) মারধর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। সেই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাতেই মারা যান বিজেপি প্রার্থী। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই রাজ্যের বিরোধী দলের আসন পেয়েছে বিজেপি। সেখানে সেই বিরোধী দলের একজন শুধু নয়, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবে অংশ নেওয়া একজনকে ‘খোদ মুখ্যমন্ত্রী’র পচা কুকুরের সঙ্গে তুলনা করা অত্যন্ত অন্যায়। ভবানীপুরের ভোটে এই ঘটনা হয়তো প্রভাব ফেলবে না, অন্যান্য মন্তব্যের মতোই হারিয়ে যাবে কয়েকদিনের মধ্যে। কিন্তু, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই ভাষায় বিরোধী দলের ‘মৃত’ নেতাকে আক্রমণ করার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অশোভন বলেই মনে করছেন তাঁরা।