সুসজ্জিত মঞ্চে একটি রুমাল হাতে নিয়ে সকলের চোখের সামনে সেটাকে বেড়ালে পরিণত করলেন জাদুকর। চমকে দিলেন দর্শকদের। ঠিক এমন ঘটনাই ঘটেছে সিপিআইএম শাসিত কেরলে (Kerala), পিনারাই বিজয়ন সরকারের এক সিদ্ধান্তে শিক্ষক থেকে রাতারাাতি ঝাড়ুদার হতে চলেছেন ৩৪৪ জন।
রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলির শিশুদের শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ দিতে বিজয়ন সরকার একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা নিয়ে চালু করে বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্র। গত ৬ মার্চ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী সেই বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।আর ১ এপ্রিল রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করে ওই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি পাকাপাকিভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ওই ৩৪৪টি শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক বা শিক্ষিকা হিসেবে যারা যুক্ত ছিলেন তাঁদের সাফাই কর্মী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় রাজ্যের শিক্ষা দফতর।
তিরুঅনন্তপুরম জেলার অম্বুরি অঞ্চলের কুন্নাথুমালা বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্রে ছেলেমেয়েদের পড়াতেন ঊষা কুমারী। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে চাকরি হারাতে চলেছেন ঊষা। তিনি জেনে গিয়েছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে এবার সাফাই কর্মী পদে কাজ করতে হবে। শুক্রবার তিনি শেষবার ছাত্রছাত্রীরদের পড়ান। ঊষার আক্ষেপ, এতদিন তিনি গরীব আদিবাসী পরিবারের শিশুদের লিখতে-পড়তে শিখিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার কাজ করেছেন। কিন্তু এখন সাফাই কর্মীর কাজ করতে হবে জেনে তাঁর ভীষণ হতাশ লাগছে। শুধু আদিবাসী শিশুদের পড়ানোর টানেই প্রতিদিন ১৪ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ হেঁটে যাতায়াত করতেন ঊষা।
শুক্রবার তিনি যখন বলেন,আজই তাঁদের স্কুলের শেষ দিন তখন পড়ুয়া থেকে অভিভাবক কেউই তাঁর কথা বিশ্বাস করতে চায়নি। অন্যদিকে কেরলের শিক্ষা সচিব মহম্মদ হানিস বলেছেন, বহুমুখী শিক্ষাকেন্দ্রগুলি আপাতত বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই সেখানে নিযুক্ত ৫০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে আপাতত আর কোনও কাজে লাগবে না। তবে তাঁদের ভবিষ্যৎ ও পরিবারের কথা ভেবে সরকার ওঁদের সাফাই কর্মী বা অন্য কোন পদে নিয়োগের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে।
যদিও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সরকার বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে।