শিক্ষা মন্ত্রকের সিদ্ধান্তে তৃতীয় শ্রেণী থেকে যুক্ত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

ai-computational-thinking-introduced-in-indian-schools-2026

নয়াদিল্লি: ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় আসছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। ২০২৬–২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্লাস থ্রি থেকেই জাতীয় পাঠ্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও কম্পিউটার থিংকিং (CT)। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রযুক্তি-নির্ভর দুনিয়ার জন্য প্রস্তুত করতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Advertisements

শিক্ষা সচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, ডিপার্টমেন্ট অফ স্কুল এডুকেশন অ্যান্ড লিটারেসির লক্ষ্য হল, ‘The World Around Us’ থিমের অধীনে AI-কে এক ‘ফাউন্ডেশনাল ইউনিভার্সাল স্কিল’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। এই পাঠ্যক্রমটি তৈরি হচ্ছে ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন 2023-এর অধীনে, যা ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি (NEP) 2020-এর নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত।

   

অ্যাডভান্টেজ ম্যাচের একাদশে চমক ইস্টবেঙ্গলের! দিমি-রবসন ছাড়াই শুরু বাগানের

এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে CBSE, NCERT, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংগঠন (KVS) ও নবোদয় বিদ্যালয় সমিতি (NVS) পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি আয়োজিত এক স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধিরা এই নীতির রূপরেখা নির্ধারণে অংশ নেন। AI এবং CT কারিকুলাম তৈরির দায়িত্বে আছে CBSE-র বিশেষজ্ঞ কমিটি, যার চেয়ারম্যান আইআইটি মাদ্রাজের অধ্যাপক কার্তিক রমন।

শিক্ষামন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই পাঠ্যক্রমের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রদান নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক ও সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা। ছোটবেলা থেকেই AI সম্পর্কে দায়িত্বশীল ও সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে তাদের ‘AI for Public Good’-এর নীতিতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।

Advertisements

যাতে ভবিষ্যতের প্রজন্ম প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে পারে সমাজের কল্যাণে।সঞ্জয় কুমার বলেন, “আমাদের কাঠামোটি হতে হবে বিস্তৃত, নমনীয় ও ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রযুক্তি যেমন দ্রুত বদলাচ্ছে, শিক্ষাব্যবস্থাও তেমনি বিকশিত হতে হবে।”

AI শিক্ষার এই নতুন অধ্যায়ের মূল চালিকা শক্তি হবেন শিক্ষকরা। তাই শিক্ষক প্রশিক্ষণকে (Teacher Training) সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রস্তুতি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য NISHTHA ও অন্যান্য জাতীয় পর্যায়ের প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। NCERT তৈরি করবে ভিডিওভিত্তিক লার্নিং রিসোর্স, হ্যান্ডবুক ও সহায়ক উপকরণ।

এছাড়া NCERT এবং CBSE-র মধ্যে গঠিত হবে একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি, যারা পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন, মাননিয়ন্ত্রণ ও সময়মতো রোলআউট নিশ্চিত করবে। ক্লাস থ্রি থেকেই AI ও কম্পিউটেশনাল থিংকিং অন্তর্ভুক্ত করা ভারতের শিক্ষা সংস্কারের ইতিহাসে এক বড় পদক্ষেপ। এটি কেবল প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, বরং নৈতিকতা, সমস্যা সমাধান ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এই তিনের সমন্বয়ে একটি সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থার দিকনির্দেশ দিচ্ছে।