বাংলাদেশ নিয়ে সোস্যাল মাধ্যমে সোচ্চার এপার বাংলার বুদ্ধিজীবীরা

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন বুদ্ধিজীবীরা। ঋদ্ধি সেন থেকে শুরু করে পবিত্র সরকার সবাই এই ঘটনার বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন। শুরুটা হল সোশ্যাল…

Intellectuals on bangladesh issue

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন বুদ্ধিজীবীরা। ঋদ্ধি সেন থেকে শুরু করে পবিত্র সরকার সবাই এই ঘটনার বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন। শুরুটা হল সোশ্যাল মাধ্যমে। পরবর্তীকালে পথেও নামবেন তাঁরা।

মূল উদ্যোগ ঋদ্ধি সেনের। তিনি লিখেছেন, “আমরা গভীর দুঃখ ও উদ্বেগ নিয়ে লক্ষ্য করলাম যে, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় তাঁদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা এবার নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারলেন না, বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা ও নানা অবাঞ্ছিত ঘটনার মধ্যে দিয়ে সে উৎসবে নানা উপদ্রব ঘটেছে।

   

বাংলাদেশের সরকার ও পুলিশের তৎপরতায় বড় রকমের বিপর্যয় হয়তো এড়ানো গিয়েছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের উদার অসাম্প্রদায়িকতা আর মুক্তিযুদ্ধের আলোকিত চেতনা—যে চেতনাকে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকার রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর বলে বিশ্বাস করি—সেই চেতনার বিরোধী এই সব অশুভ উদ্যোগ এই উপমহাদেশের সচেতন ও অখণ্ড মানবতায় বিশ্বাসী মানুষদের বিশেষভাবে বিচলিত করেছে।”

একইসঙ্গে তিনি বলেন, “নীতিগতভাবে সংখ্যালঘুর ধর্ম, সম্পত্তি, অধিকার, জীবন ইত্যাদি রক্ষার দায় সংখ্যাগুরুর হাতে—এ হল এক মানবিক দায়, এবং এই আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকারীদেরও এই বিশ্বাস। শুধু সরকারের নয়, আপামর মানুষেরও দায়। দুঃখের বিষয় সীমান্তের এই পারে ভারতেও এই দায় রক্ষার বিষয়ে নানা শৈথিল্যের ঘটনা ঘটছে, তার কারণ ভারতের রাষ্ট্রশক্তির দর্শন ও আচরণ তার প্রতিরোধে যথেষ্ট সচেষ্ট নয় বলে আমাদের ধারণা।

ওদিকে বাংলাদেশে যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করেছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তাদের রাজনৈতিক শাসন বাংলাদেশের জাগ্রত জনমতের বিদ্রোহের ফলে অপসারিত হয়েছে, কিন্তু তাদের সমর্থকদের বিপজ্জনক গোষ্ঠীগুলি নিশ্চিহ্ন হয়নি। আমরা জানি বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সে সম্বন্ধে সচেতন। সেই গোষ্ঠীগুলিই, যাদের সঙ্গে ধর্মীয় মৌলবাদীদের গভীর সখ্য, কুমিল্লা ও অন্যন্য স্থানে এই উৎপাতগুলির মূলে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তারা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারেরও কখনও প্রকাশ্যে বিরোধী, এবং কখনও বা বন্ধুর ছদ্মবেশে নানা স্থানে সামাজিক অন্তর্ঘাতে লিপ্ত। ভারতেও ধর্মীয় মৌলবাদের নানামুখী হিংস্রতার অস্তিত্ব সম্বন্ধে আমরা সচেতন, এবং বাংলাদেশের মতো এখানেও সংখ্যাগুরু বুদ্ধিজীবী সহ অন্যান্যদের জাগ্রত জনমত ওই সব অশুভ তৎপরতার বিরুদ্ধে আদর্শগত সংগ্রাম করে চলেছে।”

তাঁরা বলছেন, “তাই বাংলাদেশের সংবেদনশীল মানুষ ও তার সচেতন সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, এই সব দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, জাতির জনকের উদার বিশ্বাস আর বর্তমান সরকারের নীতির বিরোধী, বিদ্বেষমূলক ও প্ররোচনামূলক এই শক্তিগুলিকে সত্বর চিহ্নিত করুন এবং তাদের নিষ্ক্রিয় করুন। যারা এবার দুর্গাপূজার উপদ্রব করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন, যাতে এই অপশক্তিরা বোঝে যে অন্যের ধর্মের ক্ষতি করে নিজের ধর্মের মহিমা প্রতিষ্ঠা করা যায় না, রাষ্ট্রও সে অপরাধ ক্ষমা করে না।

বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের নিবেদন– আমরা নিজেদের দুই দেশের মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু মনে করি, তাদের এই ব্যাকুল আবেদন , পবিত্র সরকার, মহঃ সেলিম, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, মনোজ ভট্টাচার্য,দেবশঙ্কর হালদার,বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য,কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়,কৌশিক সেন,পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়,চন্দন সেন( অভিনেতা),একরাম আলি,মারুফ হোসেন,সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়,ইসমাইল দরবেশ,শান্তিলাল মুখার্জী,ঋত্বিক চক্রবর্তী ,পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত সহ আরও অনেকের।”