‘বুদ্ধবাবুকে খুনের ছকে জড়িত বাংলাদেশি’ ঢেকে রাখা তথ্য হাতড়াচ্ছে ঢাকা

বিশেষ প্রতিবেদন: পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে মহাকরণের মধ্যেই খুনের ছক করা হয়। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এবং গোয়েন্দাকর্তা দিলীপ…

বিশেষ প্রতিবেদন: পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে মহাকরণের মধ্যেই খুনের ছক করা হয়। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এবং গোয়েন্দাকর্তা দিলীপ মিত্র। তিনি দাবি করেছেন, এছাড়াও টার্গেটে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি ও অপর প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজ। অভিযোগ ও প্রশ্ন, বাম জমানায় এমন ভয়াবহ পরিকল্পনার কথা কেন সরকার চেপে গিয়েছিল? এই প্রশ্নে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

‘অপারেশন ব্ল্যাক স্টিলেটো’ নামে যে বইতে প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তার দাবি, জাল পরিচয় নিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা আততায়ী মহাকরণে বিস্ফোরক রেখে নাশকতার ছক করে। মাওবাদীরাও জড়িত ছিল বলে তিনি লিখেছেন।

বই থেকে তৈরি হওয়া সংবাদের ভিত্তিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ ও বাংলাদেশ গোয়েন্দা বিভাগ তথ্য হাতড়াচ্ছে। সীমান্তের ওপার থেকে অসমর্থিত সূত্রে খবর, এতদিন এই তথ্য জানাই ছিল না! আরও প্রশ্ন, কেন এতদিন জানানো হয়নি ?

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন তথ্যের আদান প্রদান হয়। বিশেষত সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়ার পরে তথ্য লেনদেনে গতি এসেছে।

পশ্চিমবঙ্গে বিগত বামফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে প্রতিবেশি বাংলাদেশ সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কূটনৈতিক স্বার্থ রেখেই ভারতের অঙ্গরাজ্যটির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার এখনও সেই ধারা বজায় রেখেছে।

পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ও কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর সঙ্গে বাংলাদেশের সৌহার্দ্য এখনও কূটনৈতিক জটিলতা সমাধানে সাহায্য করে। অপর কমিউনিস্ট নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারে আসীন হয়। দলটি এখনও সরকারে আছে।

বুদ্ধবাবুকে খুন করার যে ছক তুলে ধরেছেন প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তা। এ নিয়ে গোটা দেশে শোরগোল। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের অন্দরেও লেগেছে দোলা। সূত্রের খবর, ‘অপারেশন ব্ল্যাক স্টিলেটো’ বইটি কলকাতাস্থিত উপ দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আনাবে। বইটির বিবরণ খতিয়ে দেখা হবে।

প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, সিএমের ঘরের ওপরের ঘর থেকে একজনকে অ্যাপ্রিহেন্ড করে নিয়ে এলাম।  সে বাংলাদেশি, ফলস ডাক্তার। ডকুমেন্ট ঠিক ছিল তারও। বলা হয়েছিল, কোথায় বোম রাখলে সিএম অফিস উড়ে যাবে। 

তাৎপর্যপূর্ণ, বামফ্রন্টকে সরকারের পতন হয় ২০১১ সালে। এরপর তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গত দশবছরে এমন তথ্য সরকারিভাবে জানানো হয়নি। অভিযোগ উঠছে পূর্বতন বাম সরকার নাশকতার এমন তথ্য ঢেকে রাখল কেন? কেনইবা টিএমসির সরকার এতদিন একটি কথাও বলেনি? ঢেকে রাখা তথ্য কতটা সঠিক? উত্তর খুঁজছে ঢাকা।