এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) Reliance Power Limited (RPL)-এর চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার (CFO) অশোক কুমার পালকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, তিনি ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টি, জাল ইনভয়েসিং এবং কোম্পানির তহবিল আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত একটি বড় আর্থিক প্রতারণার মূল ভূমিকা পালন করেছেন।
জাল ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে কোটি টাকার প্রতারণা:
ED সূত্রে জানা গেছে, পালকে শুক্রবার রাতে দিল্লির অফিসে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে উঠে এসেছে, Reliance Power-এর বোর্ড রেজোলিউশনের মাধ্যমে পালকে Solar Energy Corporation of India (SECI)-এর একটি Battery Energy Storage System (BESS) টেন্ডারের জন্য প্রয়োজনীয় নথি চূড়ান্ত ও অনুমোদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই সুযোগে তিনি প্রায় ৬৮ কোটি টাকার একটি ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দেন বলে অভিযোগ।
অস্থিত ব্যাংক শাখার নাম ব্যবহার: Reliance Power CFO Arrest
ED-এর তদন্তে জানা যায়, ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টিটি FirstRand Bank, Manila, Philippines-এর নামে জারি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই স্থানে ব্যাংকের কোনো শাখাই নেই। এই জাল গ্যারান্টি তৈরি ও সরবরাহে সহায়তা করে Biswal Tradelink Pvt Ltd (BTPL) নামের একটি ছোট কোম্পানি, যার নিবন্ধিত ঠিকানা ছিল একটি আবাসিক ভবনে। BTPL-এর ডিরেক্টর পার্থ সারথি বিশ্বাস ইতিমধ্যেই বিচারিক হেফাজতে রয়েছেন এবং তিনিই জাল নথি তৈরিতে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ভুয়া ইনভয়েস ও মেসেজিং অ্যাপে লেনদেন:
ED জানিয়েছে, অশোক পাল কোটি কোটি টাকার ভুয়া পরিবহন ইনভয়েস অনুমোদন করেছিলেন, যার মাধ্যমে তহবিল স্থানান্তর করা হয়। এসব লেনদেন অফিসিয়াল SAP সিস্টেম বা ভেন্ডর মাস্টারের মাধ্যমে না করে Telegram ও WhatsApp-এর মতো মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে করা হয়েছিল, যাতে তথ্য গোপন থাকে।
ব্যাংকের ডোমেইন নকল করে প্রতারণা:
তদন্তে আরও জানা গেছে, একটি সংগঠিত জাল ব্যাংক গ্যারান্টি চক্র বড় ব্যাংকের ডোমেইন নাম নকল করে প্রতারণা চালাচ্ছিল। যেমন “sbi.co.in” ডোমেইনের পরিবর্তে “s-bi.co.in” ব্যবহার করা হয়েছিল। একইভাবে Indian Bank, IndusInd Bank এবং Punjab National Bank-এর নামেও ভুয়া ডোমেইন তৈরি করে প্রতারণা চালানো হয়।
বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত:
ED-এর মতে, অশোক পালের ভূমিকা কেবল একটি ঘটনা নয়, বরং একটি বড় অপরাধচক্রের অংশ, যেখানে জাল নথি, ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টি এবং ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থার অপব্যবহার করে একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির তহবিল আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতার হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থা।