Chandrayaan 3: চাঁদের ফাঁদ! ১০ লাখ গর্তের গোলকধাঁধায় জরুরি অবতরণের জমি খুঁজছে ইসরো

বিক্রম ল্যান্ডারকে গিলে খেতে তৈরি হয়ে আছে চাঁদের ১০ লাখ গর্ত। এই মর়ন ফাঁদের গোলকধাঁধা দেখে চমকে যাচ্ছেন ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এ যেন কিংবদন্তি লোকসঙ্গীত…

বিক্রম ল্যান্ডারকে গিলে খেতে তৈরি হয়ে আছে চাঁদের ১০ লাখ গর্ত। এই মর়ন ফাঁদের গোলকধাঁধা দেখে চমকে যাচ্ছেন ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এ যেন কিংবদন্তি লোকসঙ্গীত গায়ক আব্বাসউদ্দিনের অমর সৃষ্টি ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে’ গোছের পরিস্থিতি। কারণ একটু ভুল হলেই ওই দশ লাখ গর্তের মধ্যে হারিয়ে যেতে পারে ভারতের Chandrayaan 3 চন্দ্রাভিযান।

ও চাঁদ সামলে রেখ জোছনা…

চাঁদে নামতেই হবে এমন মরণপণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো। সর্বক্ষণ ভয় কী জানি কী হয়। এই ভয়ের আরও এক কারণ, রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস (ROSCOSMOS) এর চন্দ্রাভিযান ব্যর্থতা। রাশিয়ার লুনা ২৫ মহাকাশযান চাঁদে নামার আগেই জ্বলে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের মাটিতে নামার আগের শেষ ১৫ মিনিট সব থেকে বিপদসংকুল পথ পার হতে হয়। সেই পথে একটু ভুল হলেই সব শেষ। তার পর আছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অজানা জমি।

চাঁদের দেশে ভারতের অভিযান। সেই অভিযান দেখবেন বিশ্ববাসী। অত্যাধুনিক সরাসরি সম্প্রচারে ধরা পড়বে বিক্রমের চাঁদে নামার মুহূর্ত। ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তকে ছুঁতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি কঠিনতম সিদ্ধান্ত হল যে কোনোভাবে চাঁদের জমিতে জরুরি অবতরণ করা। এর জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বিক্রমকে। ওই দশ লাখ গর্তের মধ্যে একটু জমি খুঁজে সেখানেই নামবে বিক্রম।

চাঁদ দেখতে গিয়ে আমি…

শুরু হয়েছে কাউন্ট ডাউন। অপেক্ষা আর মাত্র কিছুক্ষণের। তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সময়টি। উত্তীর্ণ হতে পারেনি রাশিয়া। তবে কি ভারত পারবে চাঁদে নামতে? চাঁদের বুকে ঠিকভাবে অবতরণ করতে পারবে তো চন্দ্রযান ৩। ঘুরপাক খাচ্ছে এমনই প্রশ্ন। গোটা দেশ অপেক্ষা করছে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যে ৬ টার পর চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে ভারতের চন্দ্রযান ৩। কিন্তু এক্ষেত্রে তাকে বহু বাধার সম্মুখীন হতে হবে।

চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে…

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রথমত চাঁদ নিজেই ঘুরছে। নেই কোনও বায়ুমণ্ডল। এমন একটি জায়গায় পালকের ন্যায় অবতরণ করা সহজ নয়। পৃথিবীতে যেমন ভূমিকম্প হয় তেমনি হয় চাঁদেও। সেটাও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিআইটিএম অধিকর্তা শুভব্রত চৌধুরী জানিয়েছেন, ” ওখানে কতগুলো হাই পাওয়ার ক্যামেরা রাখা রয়েছে। সেগুলো স্ক্যান করছে যে কোথায় চন্দ্রযান নামবে। ল্যান্ডিং যে মাটির উপরে হয় সেটা খুবই শক্ত। সুতরাং সেখানে যে লেগ গুলো করা হয়েছে তা অত্যন্ত শক্তভাবে তৈরি করা হয়েছে। দেখা যায় এই জায়গাটি ভালো নয় তাহলে অন্য জায়গায় শিফট করে ল্যান্ড করা যায়। পালকের মত নামবে। মোটামুটি ৫০ সেন্টিমিটার পার সেকেন্ড বা তার কম স্পিডে ধীরে ধীরে নামবে”।

এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে…

তবে আশার খবর এই যে, ইসরো বিজ্ঞানীরা যে নির্দেশ দিয়ে চলেছেন, তা ঠিকমতো পালন করছে চন্দ্রযান ৩। ফলে আশা করা হচ্ছে সবকিছুই চলবে ঠিকঠাক ভাবে।চন্দ্রযান ৩ নিয়ে অন্ত নেই সাধারণ মানুষের আগ্রহের। তাই অনেকেই নজর রাখছেন ওয়েবসাইটে। কেউ কেউ আবার যোগাযোগ করছেন বিআইটিএমের সঙ্গে। গোটা দেশ তথা বিশ্ব এখন নজরে রেখেছে চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডিং। ভারতবাসীর কাছে এ যেন এক গর্বের বিষয় হবে যদি সঠিকভাবে চন্দ্রযান ৩ চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে পারে।