সদস্যদের জন্য স্বস্তির খবর! EPFO-র অগ্রিম দাবি সীমা পাঁচগুণ বাড়ল

কর্মচারী ভবিষ্যন নিধি সংস্থা (EPFO) সদস্যদের জন্য আর্থিক জরুরি অবস্থায় দ্রুত তহবিল পাওয়ার লক্ষ্যে একটি বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ইপিএফও এখন থেকে অগ্রিম দাবি (advance claims)…

EPFO Adds 15 New Banks

কর্মচারী ভবিষ্যন নিধি সংস্থা (EPFO) সদস্যদের জন্য আর্থিক জরুরি অবস্থায় দ্রুত তহবিল পাওয়ার লক্ষ্যে একটি বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ইপিএফও এখন থেকে অগ্রিম দাবি (advance claims) অটো-সেটেলমেন্টের সীমা ₹১ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ₹৫ লক্ষ করেছে। এই পরিষেবা বৃদ্ধি লক্ষ লক্ষ সদস্যকে উপকৃত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানিয়েছেন, “এই অটো-সেটেলমেন্ট পদ্ধতি প্রথম চালু হয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারির সময়। তখন তা শুধুমাত্র চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরী পরিস্থিতিতে অর্থ প্রদানের জন্য চালু হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে এর পরিসর বাড়ানো হয়েছে।”

   

কীভাবে উপকৃত হবেন EPFO সদস্যরা?
EPFO-র এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে সদস্যরা ₹৫ লক্ষ পর্যন্ত অগ্রিম দাবি তুলতে পারবেন, সেটাও একেবারেই অটোমেটেড পদ্ধতিতে, অর্থাৎ কোনো ম্যানুয়াল অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। চিকিৎসা জরুরি অবস্থা, উচ্চশিক্ষা, বাড়ির সংস্কার কিংবা বিবাহের মতো প্রয়োজনীয় খাতে এই টাকা দ্রুত পাওয়া যাবে।

এর ফলে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনি সদস্যদের আর্থিক চাপ অনেকটাই কমবে। আগে যেখানে ₹১ লক্ষ পর্যন্তই এই সুবিধা সীমাবদ্ধ ছিল, এখন সেটি পাঁচগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক বড় প্রয়োজনও মেটানো সম্ভব হবে।

EPFO কিভাবে প্রক্রিয়া করে এই দাবি?
EPFO-র আধুনিক আইটি অবকাঠামোই এই দ্রুত প্রসেসিংয়ের মূলে রয়েছে। একবার যখন কোনও সদস্যের KYC সম্পূর্ণ হয়, ব্যাংক বিবরণী সঠিক থাকে এবং অন্যান্য যোগ্যতা পূরণ করে, তখন সিস্টেম নিজে থেকেই দাবি যাচাই করে নেয়। যদি সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে কোনো মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে টাকা সদস্যের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যায়।
যেসব দাবি এই যাচাইকরণের ধাপগুলোতে ব্যর্থ হয়, সেগুলো তখন ম্যানুয়াল প্রসেসিং-এর জন্য পাঠানো হয়। তবে EPFO জানিয়েছে, বর্তমানে মোট দাবি‌র ৯৫ শতাংশই তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে।

এক নজরে সময়রেখা (Timeline of Developments):
এপ্রিল ২০২০: প্রথমবার অটো-সেটেলমেন্ট পদ্ধতি চালু হয় কেবলমাত্র চিকিৎসা সংক্রান্ত দাবির জন্য।
মে ২০২৪: সেটেলমেন্ট সীমা বাড়িয়ে ₹১ লক্ষ করা হয় এবং বিবাহ, শিক্ষা, হাউসিং ইত্যাদি দাবিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জুন ২০২৫: সেটেলমেন্ট সীমা আরও বাড়িয়ে ₹৫ লক্ষ করা হলো, যা এক বড়সড় উন্নয়ন।

Advertisements

পরিসংখ্যান যা বলছে:
EPFO-এর মতে, ২০২৫ সালের ৬ মার্চ পর্যন্ত অটো-ক্লেম সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ২.১৬ কোটি দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৯.৫ লক্ষ।
এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে অটোমেটেড সিস্টেম কতটা কার্যকর হয়েছে এবং সদস্যদের মধ্যে এর গ্রহণযোগ্যতা কতটা বেড়েছে।

সদস্যদের জন্য ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:
এই ধরনের ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে EPFO ক্রমশ একটি আধুনিক ও দক্ষ পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থায় রূপান্তরিত হচ্ছে। এতে কেবল পরিষেবা পাওয়ার সময় কমছে না, পাশাপাশি সদস্যদের উপর থেকে মানসিক চাপও অনেকটা হালকা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। আরও বেশি দাবি যাতে অটোমেটেড পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা যায় এবং আরও বেশি পরিস্থিতিকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে দিকেও নজর দিচ্ছে EPFO।

EPFO-র এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ভারতের লক্ষ লক্ষ কর্মজীবী মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক। অটো-ক্লেম সেটেলমেন্টের সীমা ₹১ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ₹৫ লক্ষ করার ফলে এখন বৃহৎ আর্থিক প্রয়োজনেও দ্রুত সাড়া পাওয়া যাবে। ডিজিটাল পরিকাঠামোর উপর নির্ভর করে EPFO যেভাবে পরিষেবার গুণগত মান উন্নত করছে, তা ভারত সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযানেরও একটি সফল উদাহরণ।

এই নতুন নীতির ফলে বহু পরিবার আর্থিক দুর্দশা এড়াতে পারবে এবং অপ্রত্যাশিত বিপদের সময় নির্ভরযোগ্য আর্থিক সহায়তা লাভ করবে — সেটাও অত্যন্ত দ্রুত ও ঝামেলাবিহীন উপায়ে।