HomeBusinessবেতন বাড়লে বাড়বে বাজারের গতি, ৮ম পে কমিশন নিয়ে জেপি মরগ্যানের পূর্বাভাস

বেতন বাড়লে বাড়বে বাজারের গতি, ৮ম পে কমিশন নিয়ে জেপি মরগ্যানের পূর্বাভাস

- Advertisement -

কেন্দ্রীয় সরকারের ১ কোটিরও বেশি কর্মচারী ও পেনশনভোগীর জন্য বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে ৮ম বেতন কমিশন। বেতন কাঠামো ও পেনশন পুনর্বিবেচনার পাশাপাশি এই কমিশনের সুপারিশ দেশের সামগ্রিক ব্যয়, কর্পোরেট আয় এবং শেয়ারবাজারের উপরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে বৈশ্বিক ব্রোকারেজ সংস্থা জেপি মরগ্যান।

সংস্থাটির ২৬ নভেম্বরের গবেষণা নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশের পর শুরু হতে পারে একটি বড় কনজাম্পশন ওয়েভ—যা ভারতের ইক্যুইটি মার্কেটকে মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে। এই সম্ভাব্য পরিবর্তনের কেন্দ্রে রয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত বিষয়—ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর।

   

ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর কেন এত জরুরি?

ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর হল সেই গুণক, যা ঠিক করে দেয় নতুন বেতন কাঠামোয় একজন কর্মচারীর বেসিক পে কতটা বাড়বে। কমিশনের নেতৃত্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা দেশাই ১৮ মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবেন। যদি এই ফ্যাক্টর বেশি হয়, তবে—
বেসিক পে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে,
পেনশনের পরিমাণও বাড়বে,
কর্মচারীদের হাতে বাড়তি অর্থ আসবে, যা সরাসরি বাড়াবে ভোগব্যয়।
জেপি মরগ্যান জানিয়েছে, এই বাড়তি ডিসপোজেবল ইনকামই পরবর্তী কয়েক বছরে বাজারের Sentiment এবং কর্পোরেট আয়ের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

আগের বেতন কমিশনের অভিজ্ঞতা:

এর আগেও বেতন কমিশনগুলি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
৬ষ্ঠ বেতন কমিশন (২০০৮)–এর ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ১.৭৪ থেকে ১.৮৬। প্রায় ৪০% বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল, যা অটোমোবাইল, হাউজিং ও রিয়েল এস্টেটে তীব্র চাহিদা সৃষ্টি করেছিল।
৭ম বেতন কমিশন (২০১৬)–এর ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল বেশি—২.৫৭। কিন্তু DA ছিল ১২৫%, যা শূন্যে রিসেট হওয়ায় প্রকৃত বেতনবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ২৩–২৫%। ফলে ভোগব্যয় বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে সীমিত ছিল।
বর্তমানে DA রয়েছে ৫৮%, এবং অনুমান করা হচ্ছে ৮ম বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার সময় তা ৬৫% ছুঁতে পারে। তাই এবার মধ্যম মানের ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরও ২০১৬ সালের তুলনায় বেশি প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি দিতে পারে।

রাজকোষের উপর চাপ, তবে চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল:

মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে জেপি মরগ্যানের অনুমান—৮ম বেতন কমিশন সরকারের উপর ৪২–৪৪ বিলিয়ন ডলার বা ৩.৭–৩.৯ লক্ষ কোটি টাকার মতো রাজকোষীয় চাপ তৈরি করতে পারে। যা ৭ম বেতন কমিশনের প্রায় চারগুণ।

এই বিপুল ব্যয় বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি চাঙ্গা করতে পারে—
অটোমোবাইল সেক্টর,
কনজিউমার ডিউরেবলস,
মধ্য ও নিম্ন আয়ের হাউজিং সেগমেন্ট।

বিশেষত টিয়ার–২ ও টিয়ার–৩ শহরগুলি, যেখানে প্রচুর সরকারি কর্মচারী থাকেন, সেখানে চাহিদা অনেক বেশি বাড়তে পারে।

এখন কী?

কমিশন নভেম্বরের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়েছে। আগামী দেড় বছর জুড়ে চলবে ইউনিয়ন বৈঠক, সেক্টর-অনুযায়ী বিশ্লেষণ ও স্টেকহোল্ডারদের মতামত সংগ্রহ। ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর চূড়ান্ত হলেই পরিষ্কার হবে বেতন কমিশনের প্রকৃত প্রভাব।

শেষ কথা:

এখনকার মতো জেপি মরগ্যান মনে করছে—বেতন বৃদ্ধি এবং বাড়তি গৃহস্থ ব্যয় আগামী কয়েক বছরে ভারতের শেয়ারবাজারের অন্যতম প্রধান চালক হয়ে উঠতে পারে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular